কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় সিদ্ধান্ত। জুনের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি থাকবে রাজ্যে। বৃহস্পতিবার বৈঠকে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনকার নিয়মেই বাজার-দোকান বন্ধ থাকবে। বাইরে বেরনোতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মিষ্টির দোকানও খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আগের নিয়মেই খোলা থাকবে সমস্ত জরুরি পরিষেবা।
বিধিনিষেধে সুফল পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। করোনা সংক্রমণের দৈনিক হার কমেছে রাজ্যে। তাই এই বিধিনিষেধকেই হাতিয়ার করে করোনাকে আরও খানিকটা বাগে আনতে চায় রাজ্য। বৃহস্পতিবার তাই কড়া বিধিনিষেধের সময়সীমা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বারবার স্পষ্ট করেছেন যে, এটা লকডাউন বা কার্ফু নয়। সংক্রমণ রুখতে কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে মাত্র। কার্ফু এবং লকডাউনে আলাদা আইন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য়বাসীকে ধন্যবাদ দিয়ে এদিন বলেছেন, 'বাধা নিষেধ জারি করায় কোভিড কমেছে। রাজ্যের মানুষ সহযোগিতা করে নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করেছে।'
এতদিন পাটশিল্পে ৩০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারতেন। এবার তা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে করোনা সংক্রান্ত সুরক্ষা-বিধি মেনে চলারও কথা মনে করানো হয়েছে। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে নির্মাণ শিল্পে কাজ চালানো যাবে। সে ক্ষেত্রে যাবতীয় করোনা-বিধি পালনের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দৈনিক সংক্রমণ দিনে দিনে কমলেও, রাজ্যে করোনায় দৈনিক মৃত্যু দেড়শোর নীচে নামছেই না। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যা কমার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যায়নি। শেষ তিন দিনেও দেড়শোর উপরেই থেকে মৃত্যু।
আর এই পরিস্থিতিতেই, রাজ্যে চলতি বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়াল রাজ্য সরকার। গত ১৬ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত কার্যত লকডাউন ঘোষণা করেছিল নবান্ন। এবার তা বাড়িয়ে ১৫ জুন পর্যন্ত করা হল। দু-একটি ক্ষেত্র ছাড়া আগের বিধিনিষেধই জারি থাকবে ওই দিন পর্যন্ত।
বিধিনিষেধ কোথায় কোথায়? ১৫ জুন পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবার দফতর ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। জরুরি সামগ্রীর উৎপাদন ছাড়া বন্ধ থাকবে কল কারখানা। বন্ধ থাকবে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, স্পা।
করা যাবে না কোনওরকম জমায়েত। বিয়ে বাড়িতে ৫০ জনের বেশি আমন্ত্রণ করা যাবে না। সৎকারে থাকতে পারবেন না ২০ জনের বেশি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না।