নয়া দিল্লি : করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তার মাঝেই চতুর্থ সেরোসার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করল ভারত সরকার। সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশের ৬৭.৬ শতাংশের দেহে তৈরি হয়ে গেছে করোনার অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি হয় টিকা থেকে তৈরি হয়েছে, নয়ত করোনা সংক্রমণের পর দেহে নিজেই তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ এই সেরোসার্ভে করেছে। দেখা গিয়েছে, মোট জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশের দেহে তৈরি হয়ে গিয়েছে করোনার অ্যান্টিবডি। তবে বাকি ৪০ কোটি এখনও অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। 


যা নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্র। কারণ, দেশে করোনা কমতেই পর্যটন স্থানগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। সামাজিক বিধিভঙ্গ করেই দেদারে চলেছে ঘোরাফেরা, খাওয়া দাওয়া। যা তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। এই প্রেক্ষাপটে সাতটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র।


আত্মতুষ্টি নয়


কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে যে, দেশের চতুর্থ সেরো সার্ভের রিপোর্টে কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও, আত্মতুষ্টিতে ভুগলে হবে না। দেশের ৩২ শতাংশ মানুষ এখনও করোনার শিকার হতে পারেন এবং সেই ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। 


জেলা পর্যায়ের পরিস্থিতি 


সেরো সার্ভের রিপোর্ট অনুসারে কোনও আলাদা জেলা হিসেবে নয়, সামগ্রিকভাবে তথ্য থেকে দেখা গিয়েছে জেলায় জেলায় অর্জিত অনাক্রমতা তৈরি হচ্ছে ধীরে ধীরে। মোট ৬৬ শতাংশ হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে দেশে। তবে সেটা সামগ্রিক ফলাফল। এর ভিত্তিতে কোনও নির্দিষ্ট এলাকাকে আলাদা করা যাবে না। তাই সাবধানতা অবলম্বন করেই চলতে হবে। 


রাজ্য-স্তরে পদক্ষেপের প্রয়োজন


স্থানীয় স্তরে কোভিডের বিরুদ্ধে লোকেদের মধ্যে অর্জিত অনাক্রমতা কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে তার জন্য আলাদা সেরো সার্ভে করার প্রয়োজন রয়েছে। রাজ্য পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, এমনটাই কেন্দ্রের নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। 


আগামী ঢেউ আসন্ন


স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে যে, সেরো সার্ভের ভিত্তিতে বলা যেতে পারে যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসা সম্ভব। কারণ কোনও কোনও রাজ্যে করোনার বিরুদ্ধে অনেক এলাকায় হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হলেও, কয়েকটি রাজ্যে এটি খুব অল্প সংখ্যক রয়েছে। যেখানে অর্জিত অনাক্রমতা কম, স্বাভাবিকভাবেই করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকছে সেখানে।


ভ্রমণ নিষিদ্ধ


জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে কেবল পার্বত্য এলাকার পর্যটনগুলিতেই নয়, স্থানীয় বাজারগুলিতেও ভিড় জমতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সতর্কবার্তার পরও নিয়ম ভঙ্গ হচ্ছে একাধিক এলাকায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, অবিলম্বে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। 


ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশ


ধর্মীয় স্থান, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে ছাড় দিলে ভিড় জমায়েত হতে শুরু করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, অবিলম্বে এই ধরনের ভিড়ে রাশ টানা দরকার। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ড, ইউপি এবং দিল্লি কানওয়ার যাত্রা নিষিদ্ধ করেছে।


সম্পূর্ণ টিকা নেওয়ার পরই ভ্রমণে অনুমতি


স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায়, কোভিড টিকা ডোজ সম্পূর্ণ হয়েছে এমন ব্যক্তিদের ভ্রমণে অনুমতি দেওয়া হবে।