চলছে পবিত্র শ্রাবণমাস। হিন্দু ধর্মে শ্রাবণকে শিবের মাস বলেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে। ভারতে, বিশেষ করে হিন্দুদের মধ্যে এই মাস ভীষণই পবিত্র। শিবভক্তরা এই সময় উপোস করেন। এই সময় হয় কাওয়াঁর-যাত্রা। বাঁকে করে জল নিয়ে কাওয়াঁররা যান বিভিন্ন শিবতীর্থে, ভোলেবাবার মাথায় জল ঢালতে।
হিন্দুধর্মে সোমবার হল শিবের বার। আবার মঙ্গলবার হল পার্বতীর বার। অনেকে শ্রাবণ মাসের এই দুই বার ব্রত ও উপোস পালন করে থাকেন। শ্রাবণী মঙ্গলবার এই কারণে বহু জায়গায় মঙ্গল গৌরী ব্রত হিসেবেও উল্লিখিত।
শ্রাবণ মাস হল হিন্দু ক্যালেন্ডারের পঞ্চম মাস। জুলাই মাসের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে অগাস্ট মাসের প্রথমার্ধ-- এটিই হল শ্রাবণ মাস। এই মাসে বহু জায়গায় জাঁকজমক করে শিবের পুজো হয়ে থাকে।
তবে, শিবের পুজোর ক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। হিন্দুশাস্ত্র মতে, এই ক'টি জিনিস আছে, যেগুলি অন্য দেবদেবীকে অর্পণ করা গেলেও, শিবকে করা যায় না।
হলুদ ও সিঁদুর -- হলুদ ও সিঁদুর প্রায় সব দেবদেবীকে অর্পণ করা গেলেও, কখনই দেওয়া যায় না শিবকে। বলা হয়, হলুদ ও সিঁদুর সৌন্দর্য্যের প্রতীক। আর ভোলেবাবা হলেন এক সন্ত, এই পার্থিব সৌন্দর্য্য থেকে অনেক দূরে।
মেহন্দি -- হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, পার্বতীকে দেওয়া হয় মেহন্দি। কারণ তা তাঁর ১৬ সৃঙ্গারের অন্তর্গত। সেই কারণে, শিবকে তা দেওয়া হয় না। শাস্ত্র অনুযায়ী, শিবের সৃঙ্গার হল ভস্ম।
তুলসী -- হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, তুলসীর প্রথম স্বামী শঙ্খচূড়কে অপছন্দ করতেন শিব ও পার্বতী। পরবর্তীকালে, শিবের হাতে মৃত্যু হয়েছিল শঙ্খচূড়ের। ফলে, তুলসী পাতায় শিবপুজো হয় না। যে কারণে, বেলপাতা দেওয়া হয়।
লোহার জলধরা -- শিবলিঙ্গ থাকলে মাথার ওপর জলধর রাখতেই হবে। জলধরা ছাড়া শিবের পুজো হয় না। তবে, সেই জলধরা কোনওভাবেই যেন লোহার না হয়। বলা হয়, এতে নেগেটিভ এনার্জি প্রবাহিত হয়।
কেতকী ও চাঁপা ফুল -- কথিত আছে, শিব এই দুই ফুলকে শাপ দিয়েছিলেন- যে এই ফুল কোনও পুজোয় লাগবে না। পরে, শিবের কাছে অনেক তপস্যা করায়, শিব তুষ্ট হন। সেই থেকে শুধুমাত্র মহাশিবরাত্রির দিন কেতকী বা কেওড়া ফুলে পুজো হয়।