কলকাতা: বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি মিহির গোস্বামী, শীলভদ্র দত্ত,  বিশ্বজিৎ কুণ্ডু-সহ বহু বিধায়কও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন।  এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল বাম-কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটের মুখে তৃণমূল সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে আস্থা ভোটের দাবি জানাল তারা। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, আমরা রোজই দেখছি তৃণমূল ভাঙছে, বিধানসভা অধিবেশন ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করুন। মানুষের মধ্যে ধারণা, সরকারে আস্থা নেই। সেটাই প্রমাণ করা উচিত। কংগ্রেস বিধায়ক ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও একই সুরে বলেন, যেভাবে তৃণমূল বিধায়করা সব ছেড়ে চলে যাচ্ছে, প্রতিদিন কাগজে দেখতে পাচ্ছি, তাহলে একবার বিধানসভা ডেকে দেখাক কত সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে!

পাল্টা বাম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগে সরব হন পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তিনি বলেন, বিজেপি যখন দমনপীড়ন চালাচ্ছে, তখন বাম-কংগ্রেসের এই ভূমিকা! ওরা যদি বিজেপি বিরোধী হয়, কিন্তু বিজেপি যা চাইছে, সেটাই মিলে যাচ্ছে ওদের দাবির সঙ্গে। মানুষের মধ্যে বাম-কংগ্রেসের প্রতি কত আস্থা আছে, সেটাও পরখ করে দেখে নেওয়া উচিত বলে পাল্টা মন্তব্য় করেন তিনি।

রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আবার দাবি করেন, এভাবে আদতে তৃণমূলেরই সুবিধা করে দিচ্ছে সিপিএম-কংগ্রেস। ওরাই দেখাতে চাইছে, তৃণমূল কতটা শক্তি নিয়ে রয়েছে।

২০১৬-র বিধানসভা ভোটে রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ২১১টিতে। বাম-কংগ্রেস জোট জিতেছিল ৭০টি আসনে। আর বিজেপি পেয়েছিল ৩টি আসন। তবে গত লোকসভা ভোটে ছবিটা অনেকখানি বদলে গিয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল ১৬৪টিতে এবং বিজেপি ১২১টিতে এগিয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের আগে শুরু হয়েছে দলবদলের পালা।

কিন্তু তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের যে দাবি বাম-কংগ্রেস তুলেছে, তা কি করা যায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে আস্থাভোট দাবির আইনি বৈধতা নেই। অধিবেশন চলাকালীন একমাত্র অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে বিরোধীরা। সেই প্রস্তাব গ্রাহ্য হবে কিনা, তা নির্ভর করে স্পিকারের সিদ্ধান্তের ওপর।