লখনউ:


অদ্ভুত কান্ড ঘটালেন উত্তরপ্রদেশের মিদিয়ানা গ্রামের বাসিন্দারা। কুমির আটকে রেখে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেন তাঁরা। জানা যাচ্ছে, দিন তিনেক আগে দুধওয়া টাইগার রিজার্ভের বাফার অরণ্যের ঠিক পাশের একটি গ্রামে কুমির ঢুকে পড়ে। সম্ভবত বন্যার জলে সেটি ভেসে আসে। গ্রামেরই একটি পুকুরে কুমিরটিকে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হলেও পরে তাতে বদল আসে। গ্রামবাসীদের মনে হয়, কুমিরটিকে আটকে রাখলে কেমন হয়। বদলে টাকার দাবি করা যেতে পারে। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। বন বিভাগকে তাঁরা জানান, গ্রামে কুমির ঢুকে পড়েছে। উদ্ধার করে নিয়ে যেতে হলে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা!

অনিল প্যাটেল, যিনি রিজার্ভের বাফার অঞ্চলের অফিসার, তিনি জানান,  কুমিরটি আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীরা ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল। বলেছিল যে কুমিরটিকে উদ্ধার করার জন্য এটা তাঁদের প্রাপ্য। অবশেষে কুমিরকে দখলমুক্ত করতে পুলিশ ডাকতে হয় ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিতে হয়। এরপরই গ্রামবাসীরা কুমির ছেড়ে দেন।

ঘটনা সম্পর্কে অনিল আরও জানান,  বন বিভাগ কুমিরটি উদ্ধারের জন্য রেঞ্জার অনিল শাহের নেতৃত্বে একটি দল পাঠায়। রাত হয়ে গেলে কুমিরের খোঁজ বন্ধ রাখা হয়। তবে বুধবার সকাল ৯ টার দিকে আরও খবর আসে যে গ্রামবাসীরা কুমিরটিকে উদ্ধার করেছেন। শাহ সেখানে পৌঁছে দেখেন বিক্ষোভ চলছে, গ্রামবাসীরা মুক্তিপণের দাবি করছেন। তাঁদের দাবি, কুমিরটি উদ্ধারের জন্য তারা পুকুরের জল সরিয়েছে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেটিকে ধরে বেঁধে রেখেছেন। বন বিভাগের কাজ তাঁরাই করেছেন, সুতরাং মুক্তিপণ প্রাপ্য। অন্তত ১৫ জন উদ্ধারকাজে যুক্ত ছিলেন। গ্রামের প্রধান শর্মা প্রসাদ এই সংক্রান্ত একটি তালিকাও দেন।

ঘণ্টাদুয়েক গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেও কাজ হয়নি। গ্রামবাসীরা সাফ জানিয়ে দেন, মুক্তিপণ না পেলে কুমির ছাড়া হবে না। কিন্তু বন বিভাগের কর্তারা তাঁদের বলেন, এ ধরনের কোনও আইনি বিধান নেই। এরপর তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ গিয়ে গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি দিলে গ্রামবাসীরা হার মানেন। গ্রামপ্রধানের অনুরোধে কোনও গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বন বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, কুমিরটি পরেরদিন ঘাগরা নদীতে ছেড়ে দেন তাঁরা।