ইম্ফল: ফের হিংসা মাথাচাড়া দেওয়ায় ইম্ফল (পূর্ব) (Imphal East) এবং ইম্ফল (পশ্চিম) (Imphal West) জেলায় কার্ফু শিথিলের (Curfew Relaxation Withdrawn)  নির্দেশ প্রত্যাহার করল মণিপুর প্রশাসন (Manipur)। সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মেইতেই সম্প্রদায়ের বিক্ষোভকারীরা বিষ্ণুপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।  বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে ব্যাপক গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এদিনের সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন জখম বলে জানা যাচ্ছে। তার পরই কার্ফু শিথিল করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা।


কী ঘটল?
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মেইতেই গোষ্ঠীর মহিলারা একটি ব্যারিকেড ঘেরা এলাকায় ঢুকতে চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। অসম রাইফেলস এবং RAF তাঁদের বাধা দিলে শুরু হয় পাথর ছোড়া, দেখতে দেখতে যা ভয়ঙ্কর হিংসাত্মক ছবি নেয়। তবে একটি সূত্রে খবর, গুলি নয়, কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর পরই জেলাশাসকের দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয় যাতে লেখা, 'ইম্ফল (পশ্চিম) জেলায় ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত কার্ফু পুরোপুরি শিথিলের যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অবিলম্বে সম্পূর্ণ কার্ফু জারি করা হল ওই জেলায়। গোটা  ইম্ফল (পশ্চিম) জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের বাইরে বেরোনো ও যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।' তবে জরুরি ও অত্যাবশ্যক পরিষেবার সঙ্গে জড়িত কর্মীদের যে এই কার্ফুর আওতা থেকে বাদ রাখা হচ্ছে, সে কথাও স্পষ্ট জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। সেই তালিকায় কারা কারা থাকছেন, সেটিও লেখা রয়েছে নির্দেশিকায়। 


মণিপুর একনজরে...
গত ৩ মে থেকে জ্বলছে মণিপুর। কুকি ও মেইতেইদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৫০ জনের প্রাণ গিয়েছে বলে খবর। শুধু তাই নয়। হিংসার আঁচে জ্বলতে থাকা উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে নারী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর অভিযোগও সামনে আসে যা জানার পর তুমুল শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে শুরু হইচই। তাতে দেখা গিয়েছিল, দু'জন মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, ঘটনাটি মে মাসের হলেও এফআইআর দায়ের, সংশ্লিষ্ট থানায় স্থানান্তর ও তদন্ত শুরু হতে দেরি হয়। এই নিয়েও হালেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।বস্তুত,  হিংসাবিধ্বংস্ত মণিপুরের রাজ্য পুলিশকে গত মঙ্গলবার তীব্র ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, 'মণিপুরের (Manipur Violence) আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রশাসন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।' সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, হিংসার যে ঘটনাগুলি ঘটেছে তা নিয়ে তিন মাসে এফআইআর রুজু হয়নি। আর যে ৬ হাজার এফআইআর হয়েছিল, তাতে হাতেগোনা কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অবস্থায় মণিপুরের ডিজিপিকে (DGP) ৭ অগাস্ট সশরীরে হাজির থাকতে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।


আরও পড়ুন:'চাকরি হোক, মমতা চান না', মন্তব্য শুভেন্দুর