আমদাবাদ: গুজরাতের অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস)-এর জালে ফের দুই। সূত্রের খবর এর মধ্যে একজন নাবালকও। একদিকে যখন দেশের মানুষের ওপর হামলার প্রত্যাঘাত ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে ব্যস্ত ছিল ভারতীয় সেনা, দুরমুশ করছিল পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসঘাঁটিগুলো, তখন এই দেশে বসেই ভারতের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র আঁটছিল এই ২ ব্যক্তি। অপারেশন সিন্দুর চলাকালীনই ভারতের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট হ্যাক করে তথ্য হাতানোর ভয়ঙ্কর কাজ করছিল এরা, অভিযোগ এমনটাই। একাধিক দেশবিরোধী বার্তা পোস্টও করে তারা। সেই সঙ্গে তাদের কার্যকলাপের প্রমাণ টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করে তারা । তারপরই গুজরাতের অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াডের নজরে আসে পুরো বিষয়টা। এরপর নাবালকসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধান অভিযুক্ত নাদিয়াদের বাসিন্দা জাসিম শাহনওয়াজ আনসারি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর মতে, ভারতীয় ওয়েবসাইটগুলিতে দেশবিরোধীদের ধারণা প্রচার করাই ছিল এদের মূল টার্গেট। গুজরাত এটিএস-এর ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) সুনীল যোশী বলেন, “আমরা প্রায়ই এমন তথ্য পাই যে হ্যাকাররা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে হ্যক করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন আমরা এই ধরনের বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি । দেশবিরোধীরা ভারতীয় ওয়েবসাইটগুলিতে ধারাবাহিকভাবে আক্রমণ করছে।” তিনি আরও বলেন, গুজরাত এটিএস-এর ইন্সপেক্টর ধ্রুব প্রজাপতি জাসিম শাহনওয়াজ আনসারি এবং একজন নাবালকের জড়িত থাকার বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছিলেন। “তারা ‘AnonSec’ নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল চালাচ্ছিল। তাদের চ্যানেলে তারা ওয়েবসাইট হ্যাক করার প্রমাণ শেয়ার করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে একটি এটিএস দল গঠন করা হয় এবং তদন্ত শুরু হয়। দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তির মোবাইল ফোন ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল)-তে পাঠানো হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায় যে দুজনে প্রথমে ‘EXPLOITXSEC’ নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল এবং একটি ব্যাকআপ চ্যানেল ‘ELITEXPLOIT’ তৈরি করেছিল, যার নাম পরে ‘AnonSec’ রাখা হয়।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর মতে, এটিএস-এর সূত্র জানিয়েছে যে দুই অভিযুক্তই ম্যাট্রিকুলেশন পাস। সীমিত শিক্ষা থাকা সত্ত্বেও, তারা ইউটিউব টিউটোরিয়াল এবং অন্যান্য অনলাইন সংস্থানের মাধ্যমে যথেষ্ট প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন করে সাইবার হ্যাকিংয়ের কাজটা শিখে ফেলেছিল। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছে, কোনও তথ্য তারা পাকিস্তানের কোনও সংস্থার কাছে পাঠাচ্ছিল কি না।
গত কয়েক বছরে গুজরাতে সাইবার অপরাধের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে পেয়েছে। ২০২৩ সালে শুধু এই রাজ্যে প্রায় ১.২১ লক্ষ সাইবার প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৩৩টি অভিযোগ। এই অপরাধের ফলে মোট ৬৫০.৫৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তথ্য আইএএনএস সূত্রে।