কলকাতা : ইয়াসের তাণ্ডবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর পাশাপাশি অন্য কয়েকটি জেলাতেও ক্ষতি হয়েছে। "এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে", বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আজও অশোকনগরে অনেকগুলি বাড়ি ভেঙেছে। শান্তিপুর, নদিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বহরমপুরে বাজ পড়ে দু'জন মারা গেছে। জল কমলে ফিল্ডে গিয়ে সার্ভে করা হবে।"
মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পূর্ব মেদিনীপুর এবং অন্যান্য জেলার মধ্যে হাওড়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩ লক্ষ বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষিজমিতে নোনা জল ঢুকে, বাঁধ ভেঙে ও বন্যার জলে ঢুকে কৃষিক্ষেত্র ও উদ্যানপালনে প্রাথমিকভাবে ১.১৬ লক্ষ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে। অর্থমূল্যে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া জল নামার পর দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক ধরনের সাপ আছে। যেটা কামড়ালেই সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মারা যায়। সুতরাং সাগর, সুন্দরবন এলাকার দিকে বেশি করে যত্ন নিতে হবে।
এর পাশাপাশি IMA-এর ডাক্তাররা যদি টিম করে করে ব্লকে যায় তার আবেদন জানান। বিশেষ করে যে ব্লকগুলিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরকম খুব বেশি হলে ৩০-৩২টি ব্লক আছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকরাও যাতে গিয়ে গিয়ে একটু দেখে নেন সেকথাও বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও ভরা কোটালের জোড়া তাণ্ডবলীলায় অন্তত এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রভাব পড়েছে ১০টি জেলায়, গতকালই একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি আকাশপথে পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সাগর, হিঙ্গলগঞ্জ, দিঘা পরিদর্শনে করবেন তিনি। সাগর ও দিঘাতে প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসনের একটি দলের সঙ্গে ইয়াসে বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকায় আকাশপথে ঘুরে দেখতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দলে থাকছেন খোদ মুখ্যসচিবও।