আশাবুল হোসেন, অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও রুমা পাল, এবিপি আনন্দ: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামগুলির। কার্যত নিশ্চিহ্ন চাঁদপুরের জলদা গ্রাম। জলমগ্ন ত্রাণ শিবির। দুর্গতরা আশ্রয় নিচ্ছেন বাঁধের ওপর। পূর্ব মেদিনীপুরে তালগাছারিতে উদ্ধারকাজে নামে সেনা। সন্দেশখালির বিভিন্ন গ্রামেও গৃহহীন বহু মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ঝাপটায় লণ্ডভণ্ড পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-র বিস্তীর্ণ এলাকা। আমফানের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কত মানুষ ফের ঘরছাড়া।মাথার ওপর ছাদ গেল, দোকানদানি জলে ডুবল, ফসল ভরা মাঠ, মাছ ভরা পুকুর ভেসে গেল।
পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুর আর শঙ্করপুরের মাঝে চাঁদপুর। সমুদ্রের তীরে ছোট্ট গ্রাম জলদা। মঙ্গলবার রাতেই এই গ্রামে উত্তাল ছিল সমুদ্র। ভাঙা বাঁধে বোল্ডার ফেলে জল রোখার চেষ্টা করেছিলেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু লাভ হয়নি।
বুধবার সকাল ১০টার পরে পুরো গ্রামই কার্যত জলের তলায় চলে যায়।ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে সাইনবোর্ডের মতোই দশা এই গ্রামের।
মঙ্গলবার রাতেও পিচের রাস্তা ধরে জলদা গ্রামে পৌঁছনো যাচ্ছিল। এদিন সকালে সেই রাস্তার চিহ্নটুকুও নেই! সকাল ১১টার মধ্যেই জলদা জলের তলায়!
পরিস্থিতি এমন যে, বিপদের আশঙ্কায় স্থানীয় ফ্লাড সেন্টারেও থাকার ঝুঁকি নেননি গ্রামবাসীরা। এদিন ঝড়ের দাপট একটু কমতেই, যে-যা পারেন, ঘর-সংসারের জিনিসপত্র নিয়ে রওনা দেন উঁচু জায়গার দিকে।
এক মহিলা বললেন,বেঁচে থাকলে গ্রামে ফিরব, উঁচু কোনও রাস্তায় গিয়ে থাকতে হবে। অন্য এক বাসিন্দা বললেন,আবার জোয়ার আসবে যখন আবার গ্রাম ভেসে যাবে।
আশ্রয়হীনের দুর্দশার ছবি ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি-সহ বিভিন্ন এলাকায়। সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ভুঁইয়া পাড়ায় বাঁধ ভেঙেছে বিদ্যাধরী। গৃহহীন শতাধিক।
বেড়মজুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকাতেও বহু বাড়ি জলের তলায়। শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা করেন অসহায় মানুষ।
ইতিমধ্যেই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে দেয় এনডিআরএফ।
ধামাখালিতে বিদ্যাধরীর বাঁধ কতটা ভেঙেছে, তা ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য খতিয়ে দেখে বসিরহাট জেলা পুলিশ।পূর্ব মেদিনীপুরে বিধ্বস্ত তালগাছারিতে উদ্ধারকাজে নামে সেনাবাহিনী।
ডায়মন্ডহারবারে দু’টি ত্রাণ শিবিরে যান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।