ভুবনেশ্বর : ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বেগ যখন প্রলয়ের হুঙ্কার হয়ে আছড়ে পড়ছে ওড়িশা উপকূলে, ঝড়ের রোষে যখন কার্যত ধ্বংস হচ্ছে বসতি, মাঠ তখনই আলোর মত এসেছে এ খবর। পড়শির রাজ্যে দশটি জেলায় জন্ম নিয়েছে অন্তত সাড়ে সাতশো শিশু। সরকারি তথ্য বলছে, বালেশ্বরের বাহনগার কাছে ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া যখন চলছে, তখন প্রথম কান্নায় পৃথিবীতে পদার্পণের বার্তা দিয়েছে বেশ কিছু নবজাতক। আর কয়েকটির জন্ম হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। ইয়াস তখন প্রবল গতিতে ছুটে আসছে উপকূলের দিকে। 


ইয়াসের আছড়ে পড়ার দিনে জন্ম। তাই অনেক বাবা-মা'ই তার কোলের শিশুর নাম ইয়াস রাখার লোভ সংবরণ করতে পারেনি। তা সে যতই ধ্বংসের প্রতীক হোক না কেন। বালেশ্বরের পরাখি এলাকার বাসিন্দা সোনালি মাইতি। তিনি যেমন বললেন, ইয়াসের থেকে ভালো নাম আর কিছু ভাবতেই পারছেন না তিনি।    


কেন্দ্রাপড়ার বাসিন্দা সরস্বতী বৈরাগী। নিজের সদ্যোজাত কন্যার নাম রেখেছেন ইয়াস। বলছেন, তাঁর মেয়ের তাঁর কোলে আসার দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতেই ইয়াস নাম রাখা। ভীষণ খুশি তিনি। 


সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ওড়িশা সরকার আগেই জানিয়েছিল, ইয়াসের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে ছিলেন প্রায় চার হাজার পাঁচশো পঞ্চান্ন জন গর্ভবতী।  


এদের মধ্যে যারা আসন্নপ্রসবা তাদের পাঠানো হয় মা গৃহতে (সন্তান প্রসব কেন্দ্র)। বাকিদের স্থানীয় হাসপাতালে। এদের মধ্যে অনেকেই সন্তানের জন্ম দেন। সহায়তা করেন আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।  



সুইট সুমন সাহু নামে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী শোনালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। বাসুদেবপুর কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে কর্মরত তিনি। বলছিলেন,অনেক গর্ভবতীই যেতে চাইছিলেন না। তিরিশে মে ডেলিভারি ডেট দেওয়া হয়েছিল কালিদাসপুরের এক মহিলার। কিন্তু তিনি কোনওমতেই রাজি হননি। তবে ছাব্বিশে মে নির্ধারিত দিনের আগেই  ওই মহিলা এক পুত্র সন্তানের  জন্ম দেন। 


এবার দেখে নেওয়া যাক কোন এলাকা থেকে কত শিশুর জন্মের তালিকা এসেছে। 


বালেশ্বর - ৫৮
ভদ্রক - ৯৮ 
কটক - ৬১
জগৎসিংপুর- (৮৪)
জয়পুর - ৬৯
কেওয়নঝড় - ৫৫
ময়ূরভঞ্জ - ৩৬
কেন্দ্রাপড়া (১৬৬)
খুড়দা (৯৫)
পুরী - ১০