কাসগঞ্জ: ঘোড়ায় টানা গাড়িতে বর যখন বিয়ে করতে চলেছেন তখন তটস্থ সেখানে মোতায়েন প্রায় ১০০ পুলিশকর্মী। আসলে এ তো শুধু বরের যাত্রা নয়, দীর্ঘদিনের বৈষম্যমূলক প্রথা ভাঙার লড়াই। জাতপাতের গণ্ডি ভেঙে ২৮ বছরের দলিত যুবক বিয়ে করতে এলেন ঘোড়ার গাড়ি চড়ে। এটা এক কথায় ‘ঐতিহাসিক’ ঘটনা।


আসলে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জ জেলার নিজামপুর গ্রামে দলিতরা ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে যাবে, এমন কথা কিছুদিন আগে পর্যন্তও কেউ বিশ্বাস করতে পারতেন না। বাধার মুখে পড়তে হবে আশঙ্কা করে হাতরাস জেলার বর সঞ্জয় জাতব আগেই নিরাপত্তা চেয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালত তাঁকে পুলিশের কাছে যেতে বলেছিল।

গত রবিবার বিয়ের আসরে বসে জাতবের ভাবী স্ত্রী টিভি চ্যানেলে দেখলেন তাঁর বরের আসার লাইভ দৃশ্য। বরযাত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন ছিল অনেক পুলিশ।

জানা গেছে, ওই  উচ্চবর্ণের বাসিন্দারা কোনও দলিত বরের বিয়ের আসরে ঘোড়ায় চড়ে আসার ঘটনা মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। জাতব জেলা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন।

কাসগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পবিত্র মোহন ত্রিপাঠী অবশ্য বলেছেন, এই বিয়েতে বাধার অন্য একটা কারণ ছিল। তিনি বলেছেন, জাতব গত ৩০ এপ্রিল নিজামপুরের শীতলকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেনন। কিন্তু ওই সময় শীতল নাবালিকা ছিলেন। তাই বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়নি। দলিত বরকে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে আসতে উচ্চবর্ণের লোকজনের আপত্তি ছিল বলে যে খবর ছড়িয়েছে তা সঠিক নয়। এখন কনে প্রাপ্তবয়স্ক। সেজন্য বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, জাতবের সঙ্গে প্রায় ১৫০ বরযাত্রী এসেছিলেন। বর ও অতিথির মনে যাতে কোনও ভয় না থাকে, সেজন্য বিয়ের শোভাযাত্রায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। গ্রামের উচ্চবরণের কেউই বারাত-এর বিরোধিতা করেননি।

অতিরিক্ত এসপি বলেছেন, তিনি নিজেও সেখানে ছিলেন।

তিনি আরও বলেছেন, কনের পরিবারকেও পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়া হয় এবং গ্রামে বাহিনী মোতায়েন করা হয়। গ্রামের পরিস্থিতি  শান্তিপূর্ণ ছিল।