নয়াদিল্লি: খাবার, পানীয় জল, জ্বালানি নিয়ে টানাটানি তুঙ্গে। তার উপর আকাশ থেকে টানা আগুন ঝরিয়ে চলেছে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF Raid In Gaza)। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য়মন্ত্রক জানাল, এর মধ্যেই সেখানে নিহতের সংখ্যা ১২০০ ছুঁয়ে ফেলেছে। একচিলতে ভূখণ্ডের একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও নিষ্ক্রিয়। হাসপাতালে জীবনদায়ী ওষুধ, যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাড়ছে জখমের সংখ্যা। সব মিলিয়ে হাহাকার গাজায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের দাবি, ইজরায়েল যেন অবিলম্বে খাবার, ওষুধ এবং পানীয় জলের মতো পণ্য গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দিতে অনুমতি দেয়। যদিও ইজরায়েল (Israel Palestine War) জানিয়েছে, হামাসের (Hamas Attacks Israel) প্রত্যেককে শেষ না করা পর্যন্ত থামবে না তারা।


কী পরিস্থিতি?
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু বলেছেন, 'বিশ্বশক্তিগুলো যে ভাবে দায়েশকে শেষ করেছে, সে ভাবেই হামাসকে একেবারে নিকেশ করে ফেলব।' দক্ষিণপন্থী এই নেতা যে ভাবে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে হামাসের তুলনা টেনে তাদের নিশ্চিহ্ন করার হুঙ্কার দিয়েছেন, তাতে গাজার উপর হামলার তীব্রতা কমবে বলে মনে করছে না আন্তর্জাতিক মহল। এর মধ্যে সিরিয়া এবং লেবানন-ও আকাশপথে হামলা শুরু করেছে বলে দাবি ইজরায়েলের। সব মিলিয়ে ধুন্ধুমার পশ্চিম এশিয়ায়। নিহতের সংখ্যা দু-তরফ মিলিয়ে ৪ হাজারের কাছাকাছি। 


নয়ছয় গাজা...
রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, ইজরায়েলের জবাবি হামলা শুরুর পর থেকে একচিলতে ভূখণ্ডের অন্তত ৩ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ বাড়ি-ঘরদোর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। যাঁরা রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের অবস্থা কল্পনার অতীত। সূত্রের খবর, সেই বাসিন্দাদের জন্য যাতে ত্রাণসামগ্রী পাঠানো যায় সে জন্য মিশর, ইজরায়েল এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে টানা কথা বলছে আমেরিকা। বৃহস্পতিবারই ইজরায়েল পৌঁছনোর কথা মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। আগামীকাল, শুক্রবার, প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করার কথা তাঁর। তার আগে, আমেরিকার তরফে বন্ধুদেশগুলির কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, হেজবোল্লা, ইরান বা হামাসের সঙ্গে তাদের কারও কথা বলার কোনও সুযোগ থাকলে যেন সেটির সদ্ব্যবহার করা হয়। শনিবারের হামলার পর এবার হামাসকে অস্ত্র সংবরণের বার্তা দিক তারা, এই আর্জিই করেছে আমেরিকা। এসবের মধ্যে জটিলতা বাড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্যে। তাঁর দাবি, হামাস জঙ্গিদের হাতে শিরশ্চেদ হওয়া শিশুদের ছবি দেখেছেন তিনি। পরে হোয়াইট হাউস জানায়, এমন কোনও ছবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে আসেনি। তার পরই প্রশ্ন তৈরি হয়, তা হলে কেন অযথা এমন কথা বললেন বাইডেন? উত্তর স্পষ্ট নয়। তবে আমেরিকা যে ইজরায়েলের পাশে, সে কথা আগেই জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। ব্লিঙ্কেনের ইজরায়েল-সফর সেই অবস্থানই জোরাল করবে, ব্যাখ্য়া আন্তর্জাতিক মহলের। অন্য দিকে ইজরায়েল জানিয়ে রেখেছে, গাজা সীমান্তে তাদের প্রায় ৩ লক্ষ সেনা তৈরি। তবে তেল আভিভ ঠিক কবে ওই ভূখণ্ডে হামলা করতে চলেছে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। আপাতত, অমানবিক ভোগান্তির ছবি গাজায়। বিদ্যুৎ নেই বহু বাড়িতে। পানীয় জল, খাবার ও ওষুধের আকাল তৈরি হচ্ছে। 


আরও পড়ুন:সুড়ঙ্গপথে হামাস হানা ইজরায়েলে! কেন হোঁচট খেল 'আয়রন ডোম'