দেশের রাজধানী। নিরাপত্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ। যার মাথায় খোদ অমিত শাহ। দিল্লি পুলিশ থেকে, সেন্ট্রাল আইবি, NIA, দেশের অভ্য়ন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সিরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ। তারপরও কেন ঠেকানো গেল না সোমবারের ঘটনা? কোথাও কি গোয়েন্দা ব্যর্থতা? ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধীদের তরফে। এরই মধ্যে লাল কেল্লার কাছে হওয়া বিস্ফোরণ নিয়ে মুখ খুলল দেশের প্রধান মুসলিম সংগঠনগুলো। মুখ খুলেছে All India Muslim Personal Law Board-ও। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশই করেছে প্রধান মুসলিম সংগঠনগুলি। বরং তাদের নিশানা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দিকেই। নিরাপত্তা ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। সেই সঙ্গে সরকারের কাছে ঘটনার বিস্তৃত, নিরপেক্ষ এবং বহু-মাত্রিক তদন্তের আবেদন জানিয়েছে। সোমবারের এই ঘটনা নিয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড সোমবার সন্ধ্যায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।বোর্ডের তরফে জারি করা একটি বিবৃতিতে বোর্ড মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ব্যক্ত করা হয়েছে । আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে।
নিরপেক্ষ তদন্ত করুক সরকার: AIMPLB
বোর্ডের সভাপতি মৌলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি বিস্ফোরণের ঘটায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে । তিনি সরকারের কাছে এই ঘটনার গভীরে গিয়ে নিরপেক্ষ এবং বহু-মাত্রিক তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। রাহমানি আরও বলেন, যদি এটি কোনও দুর্ঘটনা হয়, তবে এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, যার ফলস্বরূপ বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। কিন্তু যদি এটি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হয়, তবে এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। এই ঘটনা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই গুরুতর প্রশ্ন তুলছে। বিশেষ করে যখন দেশের রাজধানীর মতো সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকাও সুরক্ষিত নয়।' তিনি আরও বলেন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড শোকাহত পরিবারগুলির সঙ্গে আছে এবং সব আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে।
জামাত-এ-ইসলামী হিন্দ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে
জামাত-এ-ইসলামী হিন্দ (জেআইএইচ)-এর সভাপতি সৈয়দ সাদাতুল্লাহ হুসাইনি এই বিস্ফোরণে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং স্বচ্ছ ও উচ্চ-পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন।সেই সঙ্গে তিনিও নিরাপত্তা ত্রুটির জন্য সরকারের জবাব চেয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণেরও দাবি করেছেন। হুসাইনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে লাল কেল্লার কাছে হওয়া মারাত্মক বিস্ফোরণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত, যেখানে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। আমরা সেই পরিবারগুলির প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত এবং সম্পূর্ণ সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করি। আমরা এই দুঃখ ও কষ্টের এই মুহূর্তে দিল্লির মানুষের সঙ্গে আছি।' তিনি বলেন, 'মিডিয়ার প্রাথমিক খবর থেকে জানা যাচ্ছে যে এটি একটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হতে পারে। যদি তদন্তকারী সংস্থাগুলি এটি নিশ্চিত করে, তবে আমরা এই জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা দাবি করছি যে দোষীদের দ্রুত বিচারের কাঠগড়ায় আনা হোক। জাতীয় রাজধানীর কেন্দ্রে এমন ঘটনা নিরাপত্তা ক্ষেত্রে গুরুতর ত্রুটি নির্দেশ করে।' তিনি বলেন, 'সংকটের এই মুহূর্তে, নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন। যারা তাদের আদর্শগত বা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটায় , তাদের সামনে আনা উচিত'।