পাটনা: কেন্দ্রের দিল্লি অর্ডিন্যান্স (Delhi Ordinance) নিয়ে এখনও কেন রা কাড়ছে না কংগ্রেস (Congress)? পাটনায় (Patna) বিরোধী জোটের (Opposition Meet) বৈঠক শেষেই ফের জোরাল প্রশ্ন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি বা আপ-র (AAP)। এদিন আপের তরফে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল, সাংসদ রাঘব চাড্ডা এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান বৈঠকে যোগ দিলেও পরে দলের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয় তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়তে পারে বিরোধী জোটের উদ্যোক্তাদের। আপের বিবৃতিতে স্পষ্ট জানানো হয়, 'সমমনস্ক দলগুলির' বৈঠকে বহু নেতাই অনুরোধ করেছিলেন, কংগ্রেস যেন সকলের সামনে এই 'কালা কানুন'-র  সমালোচনা করে। কিন্তু কোনও অনুরোধই কানে তোলেনি রাহুল গাঁধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গের দল, এমনই দাবি আপের। 


কোথায় গণ্ডগোল?
আগামী বছর লোকসভা ভোট। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখে আপাতত পারস্পরিক দূরত্ব ভুলে লোকসভা নির্বাচনকেই এখন পাখির চোখ করতে চাইছে বিরোধী শিবির। সেই লক্ষ্যে শুক্রবার পাটনায় একত্রিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, রাহুল গাঁধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গে, শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, নীতীশ কুমার, অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পরে জোটের তরফে বিজেপি-বিরোধিতার সার্বিক বার্তাও দেওয়া হয়। কিন্তু অস্বস্তি যে এত সহজে কাটার নয়, সেটা বৈঠক শেষ হতে না হতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। আপের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা, '১৫টি সমমনস্ক দল পাটনায় বৈঠক করছে যাদের মধ্যে ১২টি দলের রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। একমাত্র জাতীয় কংগ্রেস ছাড়া, রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এমন বাকি ১১টি দলই এই কালা কানুনের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে। একথাও বলেছে যে রাজ্যসভায় তারা এই কালা কানুনের বিরোধিতা করবে।' 
ঘটনা হল, সরাসরি দিল্লি অর্ডিন্যান্সের সমালোচনা না করলেও আপ-র সঙ্গে তাদের দূরত্ব যে 'দেশের স্বার্থে' কংগ্রেস ভুলতে পারে, সে ইঙ্গিত এদিনই কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কথায় স্পষ্ট। সূত্রের খবর, বৈঠক শেষেই সনিয়া-পুত্র বলেন, 'দেশকে বাঁচাতে আত্মত্যাগে রাজি কংগ্রেস।' নির্বাচনী অঙ্ক বলছে, এই মুহূর্তে দুটি রাজ্য়ে শাসকের কুর্সি রয়েছে 'আপ'-র হাতে যা কিনা সংখ্যার নিরিখে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেসের অর্ধেক। কিন্তু স্রেফ পরিসংখ্যান দিয়ে আম আদমি পার্টির অবস্থান বুঝতে গেলে গণ্ডগোল। প্রথমে দিল্লি, তার পর পঞ্জাবে যে ভাবে কংগ্রেস শাসন হঠিয়ে তারা উঠে এসেছে, তাতে সহজে দুই দলের একসঙ্গে পথ চলা কঠিন।  হচ্ছেও তাই। বস্তুত, কংগ্রেসের পঞ্জাব ও দিল্লি শাখা এর মধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, 'অর্ডিন্যান্স'-র ব্যাপারে মোদি সরকারকেই সমর্থন করবে তারা। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় জানিয়েছেন, ভোটাভুটি হলে তাঁরা বিরত থাকবেন। এই অবস্থায়, আপের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন দলের 'অভিপ্রায়' নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে যা ছাপ রেখে গেল বিরোধী জোটের বৈঠকের প্রথম দিনও।


আরও পড়ুন:প্রতিদিন নিয়মিত মধু সেবনে কী কী উপকার হতে পারে আমাদের স্বাস্থ্যের?