নয়া দিল্লি : অভূতপূর্ব বন্যা পরিস্থিতির শিকার রাজধানী দিল্লি ( Delhi )। শীর্ণ যমুনা ( Yamuna Flood ) যে এভাবে ফুলে ফেঁপে চতুর্দিক প্লাবিত করবে, তা ভাবতে বোধ হয় পারেননি কেউই। গত ৪৫ বছরের যমুনার এমন বিধ্বংসী রূপ দেখেননি কেউ। রেকর্ড ভেঙে যমুনা নদীর জল পৌঁছে গিয়েছে লাল কেল্লা পর্যন্ত। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছেছে জল। বিপদসীমা করে বইছে জল। যমুনার অবস্থা এমনই যে , নদী পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সারা শহরে জল ঢুকছে হু হু করে।
অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে, দিল্লি সরকার বৃহস্পতিবার স্কুল, কলেজ, শ্মশান, এমনকি জল শোধনাগার পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। সকাল ৬ টায়, যমুনার জলস্তর ২০৮.৪৬ মিটারে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার রাতে জলস্তর ছিল ২০৮.৬৬ । তার থেকে সামান্য় নেমেছে জলস্তর। সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের পূর্বাভাস, শুক্রবার জলের স্তর একটু কমবে এবং দুপুর ১ টার মধ্যে ২০৮.৩০ মিটারে পৌঁছতে পারে।
দিল্লি সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের নিয়ন্ত্রক জানিয়েছে, যমুনার জল হু হু করে প্লাবিত করেছেআইটিও এবং রাজঘাটের সংলগ্ন এলাকা। ইন্দ্রপ্রস্থের কাছে শুধু জল আর জল। বন্যার জল শহরের কেন্দ্র স্থলকেও প্লাবিত করেছে। জল ঢুকে পড়েছে তিলক মার্গ এলাকায়, যেখানে রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট!
দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, সারা রাত আমাদের বাহিনী কাজ করে চলেছে। সরকারের তরফে মুখ্য সচিবকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেষ দেওয়া হয়েছে।
গত তিনদিন ধরে দিল্লিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। তার সঙ্গেই পাল্লা বেড়েছে যমুনা নদীর জলস্তর। হরিয়ানার বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার কারণেই এই বন্যা , মনে করছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, হরিয়ানার বাঁধ থেকে জল ছাড়া বন্ধ না হলে দিল্লিতে ভয়াবহ প্লাবন শুরু হবে।
যমুনার এই ভয়াল রূপ কোনওদিন দেখেনি দিল্লিবাসী । বন্যায় প্লাবিত বড় সব নালা। যমুনা নদীর জলস্তর আরও বাড়লে দিল্লির জন্য বিরাট সঙ্কট দেখা দিতে পারে। জল ঢুকে পড়ায় ৩টি ওয়াটার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে, এর জন্য পানীয় জল নিয়ে সমস্যায় পড়েছে দিল্লিবাসী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফ্রান্স থেকে ফোন করে দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে সবিস্তার জানান। সূত্রের খবর, শাহ আশ্বস্ত করেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যমুনার জলস্তর হ্রাস পেতে পারে। দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, পরিস্থিতি না শুধরালে কিছু সরকারি অফিস, স্কুল ও কলেজ রবিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।