নয়াদিল্লি : এখনও একাংশ জলমগ্ন। ফেরেনি সম্পূর্ণ স্থিতাবস্থা। এরই মধ্যেই দিল্লিতে ফের বিপদসীমা অতিক্রম করল যমুনার জলস্তর। আজ, শুক্রবার জলস্তর পৌঁছেছে ২০৫.৩৩ মিটারে। যার জেরে নিচু জলমগ্ন এলাকায় পুনর্বাসনের কাজে বিঘ্ন ঘটছে। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আজ সন্ধে ৬টা নাগাদ জলস্তর পৌঁছয় ২০৫.৩৪ মিটারে, রাত ১১টা নাগাদ তা বেড়ে ২০৫.৪৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 


যমুনার উঁচু এলাকায় অর্থাৎ হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টির মধ্যেই, গত দুই-তিন দিন ধরে জলস্তর ওঠানামা করছে। জুলাইয়ের ১৩ তারিখে সর্বকালীন রেকর্ড উচ্চতা ২০৮.৬৬ মিটারে পৌঁছানোর পর, ধীরে ধীরে নামছে যমুনার জলস্তর। প্রায় আট দিন ধরে বিপজ্জনক মাত্রায় প্রবাহিত হওয়ার পর, গত মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ জলস্তর নেমে আসে বিপদসীমার নীচে। বুধবার জলস্তর আরও কিছুটা কমে সকাল ৫টা নাগাদ হয় ২০৫.২২ মিটার। যদিও, এই অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ফের যমুনার জলস্তর বাড়তে থাকে এবং অতিক্রম করে যায় বিপদসীমা।


এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল অর্থাৎ ২২ জুলাই পর্যন্ত উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কর্তা জারি করেছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দিল্লির উঁচু এলাকায় যদি ভারী বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে নিচু এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত যে পরিবারগুলি রয়েছে তাদের পুনর্বাসনের কাজ মন্থর করে দিতে পারে। তাতে আরও কিছুদিন তাদের ত্রাণশিবিরেই থাকতে হতে পারে। শহরে জল পরিষেবাতেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। যা মঙ্গলবারই স্বাভাবিক হয়েছে। ওয়াজিরাবাদে পাম্প হাউস প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় যা থমকে যায় চার-পাঁচ দিন ধরে। প্রসঙ্গত, শহরের প্রায় ২৫ শতাংশ জল সরবরাহ নির্ভর করে- ওয়াজিরাবাদ, চন্দ্রাওয়াল ও ওখলা প্ল্যান্টের পাম্প হাউসের উপর।


দিল্লি জল বোর্ডের আধিকারিকরা বলছেন, প্রতিদিনের প্রায় ১ কোটি থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ গ্যালন জলের ঘাটতি রয়েছে। কারণ, পাল্লা এলাকায় কিছু টিউবওয়েল যমুনার জলস্তর বৃদ্ধির জেরে প্লাবিত হয়েছে। 


এদিকে এক সপ্তাহের বেশি সময় হতে চলল দিল্লির একাংশ এখনও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। প্রথমদিকে, বৃষ্টিপাতের জেরে দিল্লিতে ৮ ও ৯ জুলাই বিভিন্ন জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়। পরে যমুনার উঁচু এলাকায়- হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও হরিয়ানায় ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে নদীর জলস্তর রেকর্ড উচ্চতায় বেড়ে যায়। ১৩ জুলাই তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০৮.৬৬ মিটারে। যা ১৯৭৮ সালের রেকর্ডও ভেঙে দেয়। সেবার যমুনার জলস্তর পৌঁছে গিয়েছিল ২০৭.৪৯ মিটারে। এবার জলস্তর বেড়ে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে জল ঢুকে যায়। বিধ্বংসী সেই অবস্থায় শহরে ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়। সম্পত্তি, ব্যবসার প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।