সহাদ্রি (মহারাষ্ট্র) : ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ। এই জ্যোতির্লিঙ্গ মহারাষ্ট্র থেকে একটু দূরে, সহাদ্রি নামক একটি পর্বতে অবস্থিত। রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণের ছেলের সঙ্গে এটি সম্পর্কিত। শিবপুরাণ থেকে জানা যায় যে, সূর্য ওঠার পর ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গে যে ভক্ত স্বচ্ছ মনে ভগবান শিবের পুজো করেন, তাঁর সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, এই শিবলিঙ্গের বৃত্তান্ত...
ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গে শঙ্করের ঘাম থেকে নির্গত হয়েছে নদী-
ভীমশঙ্কর জ্যোতির্লিঙ্গ মোটেশ্বর মহাদেব নামে পরিচিত। এখানকার শিবলিঙ্গ অনেক মোটা, তাই একে মোটেশ্বর মহাদেব বলা হয়। এই মন্দিরের কাছ দিয়ে একটি নদী প্রবাহিত হয়ে গেছে, যার নাম ভীমা নদী। এই নদী সামনে গিয়ে কৃষ্ণা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। শিব পুরাণ অনুসারে, এখানে রাক্ষস ভীমা ও ভগবান শঙ্করের মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়েছিল। সেই সময় শিবের শরীর থেকে নির্গত ঘামের ফোঁটা থেকে তৈরি হয়েছে ভীমারথী নদী।
ভীমশঙ্করের সঙ্গে কুম্ভকর্ণের ছেলের সম্পর্ক-
ত্রেতা যুগে রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণের পুত্র ছিলেন ভীমা। তাঁর জন্ম কুম্ভকর্ণের মৃত্যুর পর হয়েছিল। তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর পিতাকে বধ করেছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার শ্রীরাম। তাতে তিনি ক্ষুব্ধ হন। ভগবান বিষ্ণুর থেকে প্রতিশোধ নিতে ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন তিনি। ব্রহ্মাকে প্রসন্নও করে ফেলেন। ব্রহ্মাজির বর পেয়ে ভীমা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠেন এবং দেবলোকে তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
ভীমার বিনাশ করেন ভগবান শিব-
এই অসুরের হাত থেকে বিশ্ব সংসারকে বাঁচাতে রাজা কামরূপ ভগবান শিবের পুজো শুরু করেন। ভীমা এ কথা জানতে পেরে রাজাকে কারাগারে বন্দি করেন। রাজা সেখানেও একটি শিবলিঙ্গ তৈরি করে পুজো শুরু করেন। ক্রোধে ভীমা তাঁর তলোয়ার দিয়ে শিবলিঙ্গ ভাঙার চেষ্টা করতেই, স্বয়ং শিব সেখানে আবির্ভূত হন। তখন ভীমা ও শিবের মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। তাতে মহাদেবের গর্জনে বিনাশ হয়ে যান ভীমা। এর পরে, সমস্ত দেবতা মিলে মহাদেবকে এই স্থানে শিবলিঙ্গ রূপে বাস করতে অনুরোধ করেন। তখন থেকেই এখানে ভীমশঙ্কর নামে শিব পুজো শুরু হয়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন