কলকাতা: কমপক্ষে ২ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে (Adani Group Crisis)। তা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। সংসদেও আঁচ গিয়ে পৌঁছেছে এর। সোমবার ফের সংসদে বাজেট অধিবেশন রয়েছে (Budget Session)। আরও একবার আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে হতে পারে প্রবল হই-হট্টগোল। তা নিয়ে রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত বিরোধীরা। সেই আবহে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনের ট্যুইট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। সংসদে হইচই না করে সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলার পক্ষে ট্যুইট করেছেন ডেরেক (Derek O'Brien)। তাতে প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অবস্থান ঘিরে। 


ডেরেক ও'ব্রায়েনের ট্যুইট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন


সোমবার সংসদে ফের বাজেট অধিবেশন রয়েছে। সেখানে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তীব্র গন্ডগোলের সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে সংসদে বিরোধীদের বৈঠকও রয়েছে। ওই বৈঠকে তৃণমূল থাকবে কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সকাল সাড়ে ১০টায় গাঁধীমূর্তির সামনে বিরোধীদের ধর্নায় উপস্থিত থাকবেন দলের সাংসদরা। সবমিলিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে বিরোধীরা। সেই আবহেই ডেরেকের একটি ট্যুইট নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।


রবিবার একটি ট্যুইট করেন ডেরেক। তাতে লেখেন, 'বিজেপি ভয় পেয়েছে। সংসদে তর্ক-বিতর্কের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সোমবার সংসদের দুই কক্ষে মোদি সরকারকে চেপে ধরার সুবর্ণ সুযোগ বিরোধীদের সামনে। যদি কোন ওবিরোধী দল সংসদ চলায় বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে বুঝতে হবে বিজেপি-র সঙ্গে আঁতাত রয়েছে তাদের। তৃণমূল তর্ক তায়, বাধাবিঘ্ন নয়'।



আরও পড়ুন: Assam on Child Marriage: বাল্যবিবাহ রুখতে ব্যাপক ধরপাকড়! কোলের সন্তানকে নিয়ে আর্তি মেয়েদের, ‘সমবেদনা নেই’, বললেন হিমন্ত


অর্থাৎ সংসদে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে বিরোধীদের হইচইয়ে যে সায় নেই তৃণমূলের, তা-ই প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন ডেরেক। সেই নিয়েই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে বিরোধী শিবিরে। তৃণমূলকে বিঁধেছেন সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya)। তাঁর কথায়, "আসলে মমতার ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে, বিজেপি-র সঙ্গে সহবৎ করা, বিজেপি-র সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করা। আমরা দেখেছি, যখনই কোনও চূড়ান্ত বা নির্দিষ্ট এবং নির্ণায়ক মুহূর্ত এসেছে, যেখানে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা যায় সকলকে, তৃণমূল পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের কাছে এটা নতুন নয়। ডেরেক যে ট্যুইট করেছেন, তাতে এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে, বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচিতে থাকবেন না তাঁরা।"


অধিবেশনে বাধা-বিঘ্ন ঘটানো নিয়ে যে ট্যুইট করেছেন ডেরেক, তার প্রত্যুত্তরে বিকাশ বলেন, "অধিবেশন বয়কট করা, স্লোগান দেওয়া, এ সবে তো তৃণমূলের কয়েক জন পরিচিত মুখ রাজ্যসভায়! আজ হঠাৎ এমন বিপরীত অবস্থান! এটা হচ্ছে সরাসরি ভাবে মোদিকে সমর্থন করার পরিকল্পনা, যার যাত্রা শুরু হয়েছিল জগদীপ ধনকড়কে সমর্থনের মধ্য দিয়ে।"


সংসদে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে বিরোধীদের হইচইয়ে যে সায় নেই তৃণমূলের, তা-ই প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন ডেরেক


যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের যুক্তি, "ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল তৃণমূল। সংসদীয় সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি। তাই সেই দলের মতামত নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজন নেই, যারা বাংলায় মানুষের রায়ে শূন্য হয়ে গিয়েছে। ।খনই জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যেখানে মানুষের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়েছে, সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছে তৃণমূল। যিনি সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করেছেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা নিজেদের আসন দিয়ে বিজেপি-কে জিতিয়েছে, লোডশেডিংয়ে জেতা নেতাকে সমর্থন করে, তাদের কথা শুনব না। "