জলপাইগুড়ি: মশারি, বালিশ, চাদর নিয়ে রাত থেকেই ভ্যাকসিনের জন্য লাইন। ভ্যাকসিনের জন্য মানুষ যে কতটা মরিয়া, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ছবিই তার প্রমাণ। জানা গিয়েছে, ওই ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্রে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা নেই। আগে এলে আগে পাবে, এই ভিত্তিতে, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন ১০০ জনকে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে।  সেই কারণেই রাত থেকেই মশারি, বালিশ নিয়ে লাইন দিতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রাহকরা। 


কেউ বাড়ি থেকে এনেছেন চাদর। কেউ এনেছেন বালিশ। কেউ আবার মশারি। ভ্যাকসিনের আকাল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এভাবেও বাড়ির বাইরে রাত কাটাতে হচ্ছে বহু মানুষকে। এই ছবি জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভ্যাকসিন মজুত থাকলে দিনে একশোজনকে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে এখানে।


কিন্তু অনেকেরই অভিযোগ, দিনের পর দিন লাইন দিলেও তাঁদের কপালে ভ্যাকসিন জোটেনি। তাই বাধ্য হয়ে রাত থেকে, এভাবেই বালিশ-চাদর-মশারি নিয়ে তাঁরা চলে এসেছেন হাসপাতাল চত্বরে। কেউ রাত আটটায় এসে লাইন দিচ্ছেন। কেউ আবার মাঝরাতে আসছেন।


ময়নাগুড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা তথা ভ্যাকসিন গ্রাহক সন্টু পাল বলেন, ভ্যাকসিন নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, রাত ৮টায় চলে এসেছি, সকাল ১১টায় ভ্যাকসিন নিয়ে যাব, মশার কামড় খাচ্ছি, বাড়ি থেকে মশারি, চাদর নিয়ে এসেছি, এখানেই কষ্ট করে থাকব। ওই অঞ্চলের বাসিন্দা আরেক ভ্যাকসিন গ্রাহক দুলাল কর্মকার বলেন, রাত ৩টেয় এসেছি, ১০০ জনের বেশি দেবে না বলছে, যা লাইন আতঙ্কে ভুগছি, পাব কিনা জানি না, ৩ দিন ধরে ঘুরছি।


রাত থেকে তো লাইন ছিলই, সকালে সেই লাইন আরও লম্বা হতে থাকে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। গত কয়েক দিনে জলপাইগুড়িতে রোজ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪০০-র বেশি মানুষ। অব্যাহত রয়েছে মৃত্যুও।এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন পেতে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে মানুষের। এই প্রেক্ষাপটে উত্তরবঙ্গে করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্তকুমার রায়ের দাবি,  কেন্দ্রের তরফে ভ্যাকসিন কম পাঠানো হচ্ছে। যেরকম ভ্যাকসিন আসছে, সেই অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে। তবে সংক্রমণ বাড়তে থাকায়, ভ্যাকসিনের চাহিদা আগের থেকে অনেক বেড়েছে।