মুম্বই: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অবশেষে শপথ নিলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন একনাথ শিন্ডে এবং অজিত পওয়ার। প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে টান টান উত্তেজনার পর অবশেষে সুষ্ঠ ভাবেই মিটল সবকিছু।  যদিও উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একনাথ শপথ নেবেন কি না, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই নিয়ে সংশয় ছিল। (Mahayuti Government in Maharashtra)


২০২২ সালে 'মহা বিকাশ আঘাডি জোট' ভাঙিয়ে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। শিবসেনা এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিও ভেঙে দু'টুকরো হয়। এর পর শিবসেনা (শিন্ডে) থেকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হন একনাথ। তাঁর ডেপুটি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন অজিত এবং দেবেন্দ্র। এবারও সেই ১+২ ফর্মুলাই বজায় রাখল বিজেপি, শিবসেনা (শিন্ডে), NCP (অজিত) জোট। শুধু ক্ষমতার সমীকরণ বদল হল। (Devendra Fadnavis)


এই নিয়ে তৃতীয় বার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন দেবেন্দ্র। ছ'বারের বিধায়ক তিনি। এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতি জোট ২৮৮ আসনের মধ্যে ২৩০টিতে জয়ী হয়।  বিজেপি ১৪৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৩২টিতে জয়ী হয়। বিজেপি-র এই সাফল্যের অন্যতম কারিগর ছিলেন দেবেন্দ্র। তাই এবারে গোড়া থেকেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার উপর জোর দিচ্ছিল বিজেপি এবং তাদের অভিভাবক সংস্থা RSS. শিবসেনা (শিন্ডে) যদিও আবারও একনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে অনড় ছিল। নির্বাচনের আগে বিজেপি তাদের তেমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলেও দাবি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিলেও, মনে মনে একনাথ ক্ষুণ্ণ হন বলে জানা যায়। 


কিন্তু এক্ষেত্রে অজিতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তিনি বিজেপি-র প্রার্থীকে মুখ্যমন্ত্রী চান বলে জানিয়ে দেন, আর সেখানেই খেলা ঘুরে যায় বলে খবর। শেষ পর্যন্ত একনাথ ডেপুটি হিসেবে শপথ নেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। জোটের অন্দরে এই টানাপোড়েনের জেরে প্রায় দু'সপ্তাহ সময় লেগে গেল নয়া সরকার গঠনে। বৃহস্পতিবার শেষ পর্যন্ত শপথ নিলেন দেবেন্দ্র, একনাথ এবং অজিত। 


এদিন শপথবাক্য পাঠের সময় একনাথ  বালাসাহেব ঠাকরের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, মহারাষ্ট্রের মানুষকে ধন্যবাদ জানান। শপথের আগে দলীয় কর্মীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন একনাথ।  তাঁর নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে কী কী কাজ হয়েছে, তা স্মরণ করান। সূত্রের খবর, দলের নেতাদের অনুরোধেই দেবেন্দ্রের ডেপুটি হিসেবে কাজ করতে রাজি হয়েছেন একনাথ। তিনি মুখ্যমন্ত্রী না হলে, রাজ্য মন্ত্রিসভায় দল থেকে কেউ যাবেন না বলেও জানিয়ে দেন নেতারা।