পুরী : দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে ধাম বলা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। সেই জল গড়াল বহুদূর। পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা বিষয়ে বিতর্ক। দিঘার মন্দিরকে ধাম বলা থেকে শুরু করে, দয়িতাপতির মন্দির উদ্বোধনে আসা, বিগ্রহে কোন কাঠের ব্যবহার...সব কিছু নিয়েই পুরীতে শুরু হয় অশান্তি। সেবায়েতদের এক দল প্রশ্ন তোলে, যুগ যুগ ধরে পুরীর জনন্নাথ মন্দিরকেই ধাম বলে উল্লেখ করা হয়। সেখানে দিঘাকে কেন ধাম বলা হবে। এই নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এবার বড় পদক্ষেপ করল ওড়িশা সরকার। এবার ওড়িশা সরকার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন শব্দ এবং শব্দবন্ধর উপর স্বত্ব আরোপ করতে চলেছে তারা। এর ফলে এই নির্দিষ্ট শব্দ ও শব্দ বন্ধের উপর শুধুমাত্র পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেরই অধিকার থাকবে। দিঘা-ধাম বিতর্কের পরই এই ট্রেডমার্ক দেওয়ার ভাবনা সরকারের।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার দিঘার মন্দিরটিকে "জগন্নাথ ধাম" হিসেবে উল্লেখ করেছে। তা নিয়েই আপত্তি শুরু হয়েছে পুরীতে। সেবায়েত ও পণ্ডিতদের বড় একটা অংশ মনে করে, ঐতিহাসিক ও শাস্ত্রীয়ভাবে ১২০০ বছরেরও পুরনো পুরীর মন্দিরই একমাত্র এই জগন্নাথ ধাম শব্দটি ব্যবহার করতে পারে। এনডিটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশ, শ্রী জগন্নাথ মন্দির পরিচালনা কমিটির (SJTMC) কর্মকর্তা অরবিন্দ পাধী জানিয়েছেন, তাঁরা শীঘ্রই মহাপ্রসাদ , শ্রীমন্দির, শ্রী জগন্নাথ ধাম, শ্রীক্ষেত্র এবং পুরুষোত্তম ধামের মতো শব্দে পেটেন্টের জন্য আবেদন করবেন। তাঁর ধারণা এর ফলে এই সব 'আধ্যাত্মিক পরিচয়ের অপব্যবহার এবং এর পবিত্র পরিভাষার অননুমোদিত ব্যবহার ' আটকানো যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'জগন্নাথ ধাম'উদ্বোধন করেন। তারপর থেকেই এই বিতর্কের শুরু। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আপত্তির যুক্তি খুঁজে পাননি। তাঁর মতে,এসব ওড়িশায় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির'ঈর্ষার প্রকাশ। এনডিটিভিতে প্রকাশ, ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি এই ঘটনাকে 'মালিকানা চুরির' সামিল মনে করেন।
অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায়, পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সমস্ত বিষয়টি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন পুরীর রাজেশ দয়িতাপতি। দয়িতাপতির একটি বক্তব্য ঘিরেও নানা বিতর্ক তৈরি হয়। পরে ১২মে আবার কসবায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করতে আসার কথা ছিল রাজেশ দয়িতাপতির, তবে তিনি তা ভার্চুয়ালি পর্যবেক্ষণ করেন।