খড়্গপুর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে মানসম্মান, সংবিধানের কথা মানায় না। ইয়াস-সংঘাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রিভিউ মিটিং ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোরে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের।রবিবার খড়গপুর শহরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে বোগদা এলাকায় চায়ে পে চর্চায় যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আইমা এলাকায় বিলি করেন মাস্ক। রাজ্য সরকারের দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্প নিয়ে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, দুয়ারে ত্রাণ, রেশন, ভ্যাকসিন সব পৌঁছে দেবে। কিন্তু কবে পৌঁছবে? রাজনৈতিক রং দেখে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে বলেও বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ।


ঘূর্ণিঝড় চলে গেছে।কিন্তু ইয়াস পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর রিভিউ মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর না থাকা নিয়ে বিতর্কের ঝড়, রাজ্যর সীমা ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতেও।
শুক্রবার কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর রিভিউ মিটিংয়ে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েই তিনি চলে যান দিঘায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে। 
আর এ নিয়েই অমিত শাহ থেকে রাজনাথ সিংহ, স্মৃতি ইরানি একযোগে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
শনিবার যার জবাব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাবের প্রতিফলন হয়েছে। পিএমও থেকে আমাকে অপমান করা হয়েছে।  আমার ও মুখ্যসচিবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই পরপর টুইট করা হয়।
শুক্রবার ঠিক কী ঘটেছিল, এদিন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, দিঘায় বৈঠক থাকায় সাগর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক আধিকারিককে মেসেজ করে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য আলাদা করে একটু সময় চান মুখ্যসচিব। সে সম্মতিও আসে।
এরপর কপ্টারে কলাইকুণ্ডায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তাঁর দাবি, প্রথমেই তাঁকে একটি ঘরে বসতে বলা হয়।১০-১৫ মিনিট পরে, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক আধিকারিককে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অধিকর্তা বিবেক সহায় বলেন, ১ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। ওই অফিসার বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিটিং রুমে আছেন, বৈঠক শেষ করে আসবেন।মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা আধিকারিক বলেন, মাত্র এক মিনিট কথা বললেই হয়ে যাবে।মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তিনি অনুমতি নিয়েই তখন মুখ্যসচিবকে সঙ্গে নিয়ে মিটিং রুমে যান। প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট দিয়ে বলেন, এই হচ্ছে আমাদের রিপোর্ট। দেখে নেবেন।সেখানে তখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেওয়ার পর, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, আপনার অনুমতি থাকলে আমরা কি যেতে পারি?
শুক্রবারের বৈঠকের পর সামনে আসে একটি ছবি। যাতে প্রধানমন্ত্রীর বাঁ দিকের কয়েকটি আসন ফাঁকা ছিল। এই ছবি সামনে আসার পরই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর যোগ না দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি। শনিবার যার কড়া জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কয়েকটা ফাঁকা চেয়ার রাখা হয়, আপনাদের শুধু সেই ছবি দিয়েছে। আমরা যখন কথা বলেছিলাম, সেই ছবি দেয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, আপনি একটা অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এমন করছেন যেন এটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ।
এবার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়ালেন দিলীপ ঘোষ।