ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : Acute Hemorrhagic Pancreatitis থেকেই দিলীপ ঘোষের স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। হৃদযন্ত্র, লিভার, কিডনি আকারে বড় বলে উল্লেখ রয়েছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে। রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এই লক্ষণগুলি দেখা যায়। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার-পুত্র প্রীতম দাশগুপ্ত ওরফে সৃঞ্জয়ের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এদিন বিকাল ৪.৪৫ মিনিটে শুরু হয় ময়নাতদন্ত। ময়নাতদন্তের ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে প্রীতমের। আত্মহত্যা বা ফাউল প্লে নেই, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে পর জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারীরা।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিস্তারিত তথ্য...

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশমর্গে ময়নাতদন্ত হয়েছে সৃঞ্জয়ের দেহের। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে চিকিৎসকরা বলছেন, তাঁর মৃত্যুর কারণ Acute Hemorrhagic Pancreatitis। এটা কেন হতে পারে ? কারণ, প্যানক্রিয়াসে কোনও ইনফ্লামেশন হয়েছিল বলে দেখা গেছে। অর্থাৎ, ফুলে যাওয়া। হতে পারে কোনও ইনফেকশন হয়েছিল। সেই কারণ, চূড়ান্ত করে তাঁরা বলতে পারছেন না। তবে,  Acute Hemorrhagic Pancreatitis তাঁর মৃত্যুর কারণ।

এছাড়া ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখেছেন, তাঁর হার্টের যে সাইজ সেটা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। কিডনি ও লিভারের সাইজও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। চিকিৎসকদের বক্তব্য, রক্তচাপ বেশি থাকলে এরকম আকারে বেশি থাকে। ২৭ বছর সৃঞ্জয়ের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। চিকিৎসকরা এমনও জানিয়ে দিয়েছেন যে, এর মধ্যে কোনও ফাউল প্লে তাঁরা দেখতে পাননি। কোনও আত্মহত্যার ঘটনাও নয়। প্যানক্রিয়াসের রক্তক্ষরণ, তার ফেটে যাওয়া বা Acute Hemorrhagic Pancreatitis তাঁর মৃত্যুর কারণ। হাসপাতালে নিয়ে আসার ৪ ঘণ্টা আগে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্ত যখন শুরু হয়েছে তখন থেকে ৬-৭ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

এদিন রিঙ্কুর আগের পক্ষের একমাত্র ছেলের নিউটাউনে শাপুরজি আবাসন থেকে দেহ উদ্ধার হয়। বিধাননগর কমিশনারেটের অন্তর্গত টেকনো সিটি এলাকার শাপুরজির একটি আবাসনে বাস করতেন ২৭ বছরের প্রীতম ওরফে সৃঞ্জয়। বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে আবাসন থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সেই অবস্থায় টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের পাশে অবস্থিত, নিউ টাউন থানার উল্টো দিতের ওহিয়ো হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশে খবর দিলে, পুলিশই গিয়ে দেহ বের করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় স্বভাবতই শোকস্তব্ধ দিলীপ-রিঙ্কু।

এদিন রিঙ্কুর পাশে নিমতলা শ্মশানে ছিলেন দিলীপ। সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "এটা এমন একটা ঘটনা, যার বর্ণনা দেওয়া যায় না। আমরা কল্পনাই করতে পারছি না। আমি তো এখনও বুঝতে পারছি না, কী হল। ওর মা সকালে রান্না করছিল। একটা ফোন এল। সেই অবস্থায় দৌড়ে চলে গেল। এখন এখানে এসে পৌঁছেছি আমরা।"