ওয়াশিংটন: রাত পোহালেই আমেরিকায় ক্ষমতার পালাবদল। দ্বিতীয়বারের জন্য দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই উপলক্ষে এই মুহূর্তে ওয়াশিংটন ডিসি-তে তৎপরতা তুঙ্গে। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানিও। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁদের ছবি সামনে এসেছে। ট্রাম্পকে তাঁরা অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে খবর। জানা গিয়েছে, ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাতে দু’দিন আগেই ওয়াশিংটন পৌঁছে যান মুকেশ ও নীতা। পাশাপাশি, ধনকুবের ইলন মাস্ক, জেফ বেজোসও ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন। (Donald Trump Oath Ceremony)


ভারতীয় সময় অনুযায়ী, সোমবার রাত ১০.৩০টা থেকে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। সেখানে বক্তৃতাও করবেন ট্রাম্প। এই  সূচনা-ভাষণ অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী চার বছর আমেরিকার শাসনকার্য কোনদিকে চালিত হবে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সরকারের অবস্থান কী হবে, বিদায়ী ভাষণেই তার ইঙ্গিত মেলে। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্প কোনও বার্তা দেন কি না, সেদিকেও নজর সকলের। (Donald Trump Inauguration Ceremony)


আমেরিকার চিফ জাস্টিস জন রবার্টস ট্রাম্পকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। বায়ুসেনার বিমানও সেই উদযাপনে অংশ নেবে। তবে এই মুহূর্তে আমেরিকায় তীব্র ঠান্ডা। তাই খোলা আকাশের নীচে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে, এবার নির্দিষ্ট কক্ষে শপথবাক্য পাঠ করবেন ট্রাম্প। ১৯৮৫ সালে রোনাল্ড রেগানই প্রথম নির্দিষ্ট কক্ষের মধ্যে শপথ নেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। ট্রাম্পও সেই নীতি অনুসরণ করছেন। 


আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ট্রাম্প। তার আগে, ভার্জিনিয়ার ট্রাম্প ন্যাশনাল গল্ফ ক্লাবেও বিরাট আয়োজন হয়েছিল। আপাতত ক্যাপিটলে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। Meta কর্তা মার্ক জাকারবার্গ, Apple কর্ণধার টিম কুক, TiTok-এর সিইও শু চিউ-ও উপস্থিত থাকছেন শপথ অনুষ্ঠানে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বিদায়ী ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনও থাকছেন। শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন বাইডেন। 


এর আগে, বাইডেনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়া নিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় আমেরিকায়। হার স্বীকার করতে সেবার রাজি হননি ট্রাম্প। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন। এর ফলে ট্রাম্প সমর্থকরা ক্য়াপিটল হিলে ভাঙচুর চালায়। সেই ঘটনা আমেরিকার ইতিহাসে 'কালো দিন' হিসেবেও চিহ্নিত হয়। সেই প্রসঙ্গেই বাইডেন শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেন বলে মত অনেকের। 


তবে এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসই শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করবেন বলে ইঙ্গিত মিলেছিল সমস্ত সমীক্ষাতেও। কিন্তু ফল বেরোতে দেখা যায়, কমলা শুধু পিছিয়েই পড়েননি, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যবধানও অনেকটাই। এমনকি ডেমোক্র্যাটসদের এলাকা বলে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলিও কমলার থেকে ছিনিয়ে নেন ট্রাম্প। কমলার পরাজয়ের জন্য ডেমোক্র্যাটসদের ভুল নীতিকে যেমন দায়ী করা হয়, তেমনই ট্রাম্পের আগ্রাসী এবং বিভাজনমূলক প্রচারকেও দায়ী করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও। পাশাপাশি, বাইডেন জমানায় আমেরিকাবাসীর মনে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, কমলাকে তারও ফল ভুগতে হয়েছেন বলে মনে করেন কেউ কেউ।