সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বঙ্গে আরও গভীরে জালনথি চক্র? বারাসাতে ব্যান্ড মালিকের বিরুদ্ধে জালনথি তৈরির অভিযোগ। গ্রেফতার ব্যান্ড মালিক ইন্দ্রজিৎ দে। বাংলাদেশিদের জালনথি তৈরি করে দিতেন ধৃত, দাবি পুলিশের। ধৃত ইন্দ্রজিৎ দে-কে ৩দিনের পুলিশ হেফজাতের নির্দেশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বারাসাতে বলে এই ব্যক্তিও জাল নথি তৈরি করতেন। ধৃতকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কথায় বলে, নামে কী এসে যায়! কিন্তু বিষয় যখন জাল নথি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ, তখন তো এসে যায়। ওপারে নুরুল ইসলাম, এপারে এসে নারায়ণ অধিকারী! কীভাবে নকল সার্টিফিকেট দিয়ে তৈরি হত আসল পরিচয়পত্র? কীভাবে বদলে যেত নাম?উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত পুলিশ।চলতি মাসেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন বারাসাত আদালতে মুহুরি পরিচয় দেওয়া বারাসাত নবপল্লির বাসিন্দা সমীর দাস। পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের নাগরিকদের নিয়েই জাল নথির কারবার ফেঁদে বসেছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার পুরী ও বারাসাত থেকে সমীর দাসের সহযোগী আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার জ্যোতির্ময় দে ও বিবেক বেরা নামে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। জ্যোতির্ময় দে (২২) বাংলাদেশের খুলনা জেলার মাগুরার বাসিন্দা। থাকতেন বারাসাত নবপল্লিতে থাকতে জ্যোতির্ময়। অপর ধৃত বিবেক বেরা (২৬)-র বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায়। এই নিয়ে জাল নথিকাণ্ডে সমীর দাস সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্য়ে ৭ জনই বাংলাদেশি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বাংলাদেশ থেকে আসার পর নিজের বার্থ সার্টিফিকেট, আধার কার্ড তৈরি করে আস্তানা গাড়েন তাঁরা। তারপর শুরু করেন, জাল নথি দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করার কাজ।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থেকে পুলিশের জালে ধরা পড়েন বাংলাদেশের মাদারিহাটের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের মুসাপুরের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম।স্থানীয়দের কাছে নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন রফিকুল। পুলিশ সূত্রে খবর, বেআইনিভাবে এদেশে ঢুকে ভুয়ো ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড- সবই তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি। বারাসাতের কাজিপাড়ায় বানিয়েছিলেন, দোতলা বাড়ি।
রফিকুলের বাড়িতেই প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ভাড়া থাকতেন নুরুল ইসলাম। যিনি এদেশে ঢুকে নাম বদলে হয়ে গিয়েছিলেন নারায়ণ অধিকারী! করতেন মাছের ব্যবসা।শুধু নাম বদলই নয়, বাংলাদেশ থেকে এপারে এসে রীতিমতো ভোল বদলে ফেলেছিল দত্তপুকুর থেকে ধৃত বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী। নেড়া হওয়ার পাশাপাশি কেটে ফেলেছিল গোঁফ-দাঁড়ি। কীভাবে নাম ভাঁড়িয়ে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি হত তা জানতে, দুই অনুপ্রবেশকারী নুরুল ইসলাম ও শেখ রফিকুল ইসলামকে ৫ দিনের হেফাজতে নিয়েছে বারাসাত থানার পুলিশ।ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন, ওপার বাংলা থেকে এসে কেটে নিল ফসল, প্রতিবাদে পাথরের আঘাতে আহত এক ভারতীয় !
বৃহস্পতিবার পুরী ও বারাসাত থেকে সমীর দাসের সহযোগী যে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ তাঁদের ২ জন হলেন বারাসাত নবপল্লির বাসিন্দা রূপক মণ্ডল, হৃদয়পুরের বাসিন্দা তমাল হালদার। পুলিশ সূত্রে খবর, তমালের বাড়ি থেকে মেলে আধার তৈরির সরঞ্জাম। আধার লিঙ্ক যেত বিবেকের কাছে। বিবেকের ল্যাপটপেই তা খোলা হত। তারপর বানিয়ে ফেলা হত ভুয়ো আধার, ভোটার কার্ড।