ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী,কলকাতা: নিউ আলিপুর মাদক তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজেপির যুব মোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামীকে গ্রেফতারের দিন এবং তার আগের ও পরের দিন রাকেশ সিংহের বাড়িতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে এই দৃশ্য ধরা পড়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি বর্তমানে ফেরার।


২৭ মার্চ রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। হাইভোল্টেজ ফাইটের পারদ চড়ছে। টানটান সেই আবহে নিউ আলিপুর মাদক তদন্তের জালও ক্রমশ ছড়াচ্ছে। মাদক চক্রের নাগাল পেতে বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, সেখানেই মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পামেলা গোস্বামী এর আগে দাবি করে, ‘‘রাকেশ সিং আমার গাড়িতে কোকেন রেখে। রাকেশ সিং আমাকে অন্য চোখে দেখতে শুরু করেছিল৷’’


গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী তাঁরই দলের নেতা রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সরব। মাদককাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে রাকেশও এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে দাবি, রাকেশ সিংহের অরফানগঞ্জ রোডের বাড়ির সামনে সিসিটিভি ফুটেজে এক ব্যক্তির যাতায়াত সন্দেহ বাড়িয়েছে ৷ ১৯ ফেব্রুয়ারি নিউ আলিপুরে গ্রেফতার হন যুব বিজেপি নেত্রী পামেলা ৷ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ১৮, ১৯ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি, পরপর ৩ দিন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের বাড়িতে যেতে দেখা গিয়েছে এক ব্যক্তিকে। ২০ ফেব্রুয়ারি আলিপুর সেশনস্ কোর্ট থেকে বেরনোর সময় রাকেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনতে গিয়ে আরও এক ব্যক্তির কথা চিৎকার করে বলেছিলেন পামেলা। তিনি বলেন, রাকেশ সিং ওই ছেলেটাকে পাঠিয়েছিল, ও কোথায় গেল?


স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সিসিটিভি ফুটেজের সন্দেহভাজনই কি সেই ব্যক্তি? গোয়েন্দারা পামেলা ও রাকেশের মধ্যে লিঙ্কম্যান থাকতে পারে বলে যে সন্দেহ করছেন, সিসিটিভিতে ধরা পরা আগন্তুক আসলে কি তিনিই? গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সিসিটিভিতে যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি এখন ফেরার। প্রশ্ন উঠছে, ওই ব্যক্তি কেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের বাড়িতে গিয়েছিলেন? কেনই বা বিজেপি নেতার গ্রেফতারির পর উধাও হয়ে গেলেন তিনি? এই প্রশ্নেরই জট খোলার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। বিজেপি নেতানেত্রীর কোকেন যোগের অভিযোগকে ঘিরে জারি রয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সম্পাদক বিজয়া রাহাতকর বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে, কিন্তু বিষয়টা যা হচ্ছে ভাল হচ্ছে না। রাকেশ সিংহের বাড়ি ঘিরে ফেলছে ৫০০ পুলিশ। প্রতিশোধের রাজনীতি।’’ ভোটের মুখে শুরু হওয়া মাদক তদন্তের জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।