সৌমিক সাহা, লন্ডন: বাংলায় প্রাণের উৎসবে উপসংহার হয়ে গিয়েছে। বিলেতে কিন্তু এখনও পুজোর আনন্দ অটুট। লন্ডনের ক্যামডেনের পুজো দেখলে মনে হবে, কলকাতার ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো যেন সাহেবমুলুকে হাজির হয়েছে। ৫৯তম বর্ষে ব্রিটেনের সেরা হেরিটেজ পুজোর পুরস্কার পেয়েছে ক্যামডেনের মাতৃ আরাধনা।


কতটা পথ হাঁটলে তবে পথিক হওয়া যায়। লন্ডনের ক্যামডেনের পুজো দেখলে যে প্রশ্নটা মনে আসে, তা হল কতটা পথ পেরোলে প্রবাসের বুকে একটা উৎসব একটা জাতির আইডেন্টিটি হয়ে উঠতে পারে। জাতি, ধর্ম, বর্ণের গণ্ডি ছাড়িয়ে পুজোর চারটে দিন ক্যামডেনের মাতৃমণ্ডপে এক ছাতার তলায় হাজির সবাই।


দেখতে দেখতে অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় পার। প্রবাসের মাটিতে আজও একই রকম আবেদন ধরে রেখেছে টেমসের ধারে ক্যামডেনের দুর্গাপুজো। যা লন্ডনের অন্যতম বড় পুজো হিসেবে পরিচিত। লন্ডন দুর্গোৎসব কমিটির চেয়ারম্যান আনন্দ গুপ্ত বলেন, পুজোর একটা মানে থাকে। জাতি বর্ণ ধর্ম, ভেদ না রেখে বহু মানুষ এক ছাদের তলায়। সেটাই এই পুজোর সার্থকতা।যার জন্য কাজ তিনিই করিয়ে নেন। লক্ষ্মী মিত্তল আমাদের মেন পেট্রন। আমাদের কখনও কোনও অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়নি। কিছু বাধা আসে। মায়ের কাজ ভেবে আমরা করি। আমরা সকলে প্রফেশনাল। এটা আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।


এবছর পুজোর আয়োজন করা হয়েছে, সুইস কটেজ লাইব্রেরিতে। আর সেখানেই প্রাণের উৎসব মিলিয়ে দিচ্ছে সবাইকে। লন্ডন দুর্গোৎসব কমিটির ট্রাস্টি সঞ্চিতা ভট্টাচার্য বলেন, কালচারাল অ্যামালগামেশন তো বটেই। সর্ব ধর্মের লোক আসে। বলে না, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা এটা ভীষণ ভাবে ফলো করি। আমরা দেখতে পাই, আফ্রিকান ডান্সার আসছে। আমরা বাংলার একটা ছোট্ট থালিকে তুলে এনেছি। ফুচকা থেকে দোহারের গান। সাদা লোক বলি না, ওরা এসে লাবড়া খিচুড়ি খায়।


দেদার আড্ডা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঙ্গে চপ, সিঙাড়া, ফুচকার অমোঘ হাতছানি। ক্যামডেনের পুজো মানেই যেন লন্ডনের বুকে এক টুকরো কলকাতা। ৫৯ তম বছরে ব্রিটেনের সেরা হেরিটেজ পুজোর পুরস্কার পেয়েছে ক্যামডেনের মাতৃ আরাধনা। ক্যামডেনের পুজোয় বৃহস্পতিবার ছিল ষষ্ঠী। রবিবার দশমী। বিলেতে পুজোর ছুটির চল না থাকায় উইকেন্ডের অফ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে পুজোর দিনগুলোয়। লন্ডন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্য সন্দীপ সান্যাল বলেন, এখানে তো ছুটি থাকে না। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পুজো। উইকেন্ড নবমী দশমীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।