কলকাতা: হিন্দু শাস্ত্রমতে মহা নবমী বা দুর্গা নবমী হল আসুরিক শক্তি বধে বিজয়ের দিন। শ্রী শ্রী চণ্ডী থেকে জানা যায়, দুর্গা রুদ্ররূপ (মা কালী) ধারণ করে মহিষাসুর এবং তাঁর তিন যোদ্ধা চণ্ড, মুণ্ড এবং রক্তবিজকে হত্যা করেন।
নবমী তিথি শুরুই হয় সন্ধিপুজো দিয়ে। আমরা সবাই জানি যে সন্ধিপুজো হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিট জুড়ে। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা হয় এই সময়ে। একশো আটটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও একশ আটটি পদ্মফুল নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে।
আর ঠিক এই কারণে পুজোর মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। নবমীর মন্ত্র হল-কালি কালি মহাকালি কালিকে কালরাত্রিকে | ধম্মকামপ্রদে দেবি নারায়ণি নমোস্তু তে || লক্ষ্মী লজ্জে মহাবিদ্যে শ্রদ্ধে পুষ্টি স্বধে ধ্রুবে | মহারাত্রি মহামায়ে নারায়ণি নমোস্তু তে || কলাকাষ্ঠাদিরূপেণ পরিণামপ্রদায়িনি | বিশ্বস্যোপরতৌ শক্তে নারায়ণি নমোস্তু তে || এষ সচন্দন-পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ নমঃ দক্ষযঞ্জ বিনাশিন্যে মহাঘোরায়ৈ যোগিনী কোটিপরিবৃতায়ৈ ভদ্রকাল্যৈ ভগবত্যৈ দুর্গায়ৈ নমঃ ||
নবমীর বিশেষত্ব যদি কিছু থাকে তা হল হোম-যজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্যে। নবমীতেই মূলত হোম হয়ে থাকে, ব্যতিক্রমী নিয়মও থাকতে পারে। মূলত আঠাশটা বা একশো আটটা নিখুঁত বেলপাতা লাগে। বালি দিয়ে যজ্ঞের মঞ্চ বানিয়ে বেলকাঠ ঠিকভাবে নিয়মমতো সাজিয়ে পাটকাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে ঘি’তে চুবিয়ে বেলপাতাগুলো নিবেদন করা হয়। তারপর সবার শেষে একটি কলা চেলীতে বেধে পান নিয়ে সেটা ঘি’তে চুবিয়ে পূর্ণাহুতি দেওয়া হয়। তারপর তার মধ্যে দই দেওয়া হয় ও দুধ দিয়ে আগুন নেভানো হয়।
অন্যদিকে, নবরাত্রির নবমীতে দুর্গার ৯টি রূপ হিসেবে মেয়েদের পুজো করে খাওয়ানোর রীতিও রয়েছে। হিন্দু ধর্মে দুর্গা নবমীর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। মহা নবরাত্রিতে দেবী দুর্গার আরাধনার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। যদিও সারা বছর ধরে যে উৎসবের জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি, তার বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে দেয় এই নবমী নিশি। তাই নবমী নিশিকে আমরা সবাই ধরে রাখতে আকুতি জানাই। বাজতে থাকে একটাই সুর- “ওরে নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান”।