Durga Puja 2023: প্রবাসের মাটিতে দুর্গাপুজো (Durga Puja) এখন পরিচিত বিষয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেই বাঙালিরা একত্রিত হয়ে দেবী দুর্গার আরাধনায় যোগ দেন। শুধু যে বাঙালিরা এই পুজোয় মেতে ওঠেন তা কিন্তু নয়। সকলেই উৎসবের মরসুমে উৎযাপনে গা ভাসিয়ে দেন। তবে এবার টরন্টোর একটি পুজোয় রয়েছে বেশ চমক। টরন্টো থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে গুয়েলফ (Guelph) শহর। সেখানে এই বছর প্রথমবার মাতৃ আরাধনার আয়োজন করেছে 'ইন্ডিয়া কানাডা কনসোর্টিয়াম'। আর প্রথম বছরের পুজোতে মা দুর্গার (Devi Durga) পুজো করবেন মহিলা পুরোহিত। কলকাতাবাসী এখন 'মহিলা পুরোহিত' কনসেপ্টের সঙ্গে পরিচিত। তবে কানাডার মাটিতে এটাই প্রথমবার। এই দুর্গাপুজোর আবার একটি নামকরণও হয়েছে রয়্যাল সিটি দুর্গাপুজো। আয়োজকদের মূল লক্ষ্য হল লিঙ্গ বৈষ্যমের ফাঁদে পা না দিয়ে বরং 'টিম গেম' হিসেবে কাজ করা। পুজো উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হবে বিশেষ পত্রিকা। ভারতের অনেক প্রদেশের ভাষার পাশাপাশি সাঁওতালি ভাষাতেও লেখা থাকবে এই পত্রিকায়। ইতিমধ্যেই সাজো সাজো রব শুরু হয়ে গিয়েছে গুয়েলফ শহরে। পুজো অবশ্য হবে আমাদের দেশের বেশ কিছুটা পরে।
লিঙ্গ বৈষম্যকে দূর করতেই মহিলা পুরোহিত
হৈমন্তী ভট্টাচার্য, কলকাতারই বাসিন্দা। সংস্কৃত এবং বৈদিক সাহিত্য নিয়ে স্নাতোকোত্তর পড়াশোনা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বেশিদিন হয়নি গুয়েলফ শহরের বাসিন্দা হয়েছেন। কিন্তু সেখানকার প্রথমবারের দুর্গাপুজোর পুরোহিত তিনিই। বিদেশের মাটিতে মহিলা পুরোহিত হিসেবে দুর্গাপুজোর মত দায়িত্ব নেওয়া ছোটখাটো ব্যাপার নয়। হৈমন্তীর কথায়, 'ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে পুজোর পরিবেশ রয়েছে। দাদু, ঠাকুরদা, বাবা সকলকেই নিষ্ঠাভরে পুজো করতে দেখেছি। বাবা আশিস ভট্টাচার্যের হাত ধরেই আমারও পৌরহিত্য শুরু। বাড়িতে কোনওদিন পুরুষ, মহিলা, এইসব লিঙ্গভেদ ছিল না। শুদ্ধ মনে নিষ্ঠা ভরে পুজো করাটাই ছিল আসল। সেই থেকেই আমার উৎসাহ জন্মায়। তারপর ধীরে ধীরে সব শিখে নিয়েছি বাবার থেকে। পুজোর নিয়মানুবর্তিতা, স্পষ্ট মন্ত্রোচ্চারণ, গুরুজনদের পুজো করার আদব-কায়দা বরাবরই টানত আমায়। সেই থেকেই এই সিদ্ধান্ত। পুজো করতে যখন জানি তখন মায়ের আরাধনা করতে বাধা কোথায়।'
স্থানীয়দের উৎসাহেই গুয়েলফ শহরে শুরু হচ্ছে দুর্গাপুজো
এবছরই ধুমধাম করে দোল উৎসব পালন করেছেন সকলে। এবার জাঁকজমকের পারদ আর একটু চড়বে। মা দুর্গার পুজো বলে কথা। ভুরিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুজোর নিয়ম-কানুন, আচার-রীতিনীতি সবই থাকবে গুয়েলফের পুজোয়। ধুনুচি নাচের সঙ্গে থাকবে গরবা নাচের ব্যবস্থাও। বিরাটি থেকে ইতিমধ্যেই প্রতিমা পৌঁছে গিয়েছে গুয়েলফে। মোট ৩৩টি পরিবার মিলিত হয়ে পুজোর আয়োজন করেছেন। গ্রেটার টরন্টো এরিয়া থেকেও যোগ দিয়েছেন প্রচুর মানুষ। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা (বর্তমানে গুয়েলফ নিবাসী) ১০৮ জন মহিলা মায়ের সামনে আরতি করবেন। আর সেই আরতি অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন গুয়েলফ শহরে মেয়র এবং তাঁর স্ত্রী। আগামী ২৮ এবং ২৯ অক্টোবর গুয়েলফ শহরে প্রথমবারের মতো দুর্গাপুজো হতে চলেছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এবং ব্যস্ততা দুইই এখন তুঙ্গে। দম ফেলার সময় নেই কারও। মাত্র কয়েকমাসের পরিকল্পনা, আর একটা বড় স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলেছে আর কয়েকদিনের মধ্যেই।