Hydra Facial: আজ চতুর্থী। অনেকেই ঠাকুর দেখা কিন্তু শুরু করে দিয়েছেন। বাকিরা অপেক্ষায় স্কুল, কলেজ ছুটির বা অফিসে ছুটি পাওয়ার। মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর তো দেখবেন, কিন্তু তার আগে একটু নিজের ত্বকেরও পরিচর্যা (Skin Care) প্রয়োজন। এবছর চারদিকে বারবার শোনা যাচ্ছে 'হাইড্রা ফেসিয়াল'- (Hydra Facial) এর নাম। এই ফেসিয়াল আমাদের ত্বকের জন্য কতটা জরুরি, কীভাবে এই ফেসিয়াল করা হয়, কী কী উপকার পাবেন, সেই প্রসঙ্গেই বিশদে জানালেন কসমেটোলজিস্ট সায়ন্তন দাস। 


ত্বকের আর্দ্র ভাব বা ময়শ্চারাইজার কমে গেলে ত্বক দেখতে ভীষণ রুক্ষ, শুষ্ক, জৌলুসহীন লাগে। ময়শ্চারাইজার লাগালে হয়তো মুখ অতিরিক্ত তেলতেলে লাগছে। আবার না লাগালেও মুশকিল। ত্বক মারাত্মক রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে। এমনিতেও এখন বাতাসে হাল্কা শিরশিরানি ভাব এসে গিয়েছে। পরিবর্তন হচ্ছে আবহাওয়ার। তাই শীতের মরসুম শুরু হওয়ার আগে একবার হাইড্রা ফেসিয়াল অ্যাপ্লাই করে দেখতেই পারেন। সায়ন্তন জানিয়েছেন, মূলত ত্বকের ময়শ্চারাইজার অর্থাৎ আর্দ্রভাব ধরে রাখার জন্যই করা হয় এই হাইড্রা ফেসিয়াল। ত্বক যত আর্দ্র থাকবে ততই দেখতে ভাল লাগবে। ত্বকের জেল্লা বাড়বে। এইসব কারণেই আজকাল সকলের ঝোঁক রয়েছে হাইড্রা ফেসিয়ালের দিকে। তবে শুধু ফেসিয়াল করলেই হবে না, পরিমিত জল খাওয়াও কিন্তু প্রয়োজন। কারণ শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলে কিন্তু তার প্রভাব পড়বে আপনার ত্বকেও, একথা বারবার বলেছেন সায়ন্তন। 


কীভাবে করা হয় হাইড্রা ফেসিয়াল


এর জন্য একটি বিশেষ যন্ত্র রয়েছে এবং অনেকগুলো পর্যায়ে এই ফেসিয়াল করা হয়। মূল লক্ষ্য হল ত্বকের একদম গভীর স্তর পর্যন্ত আর্দ্রতা পৌঁছে দেওয়া যাতে ত্বক ময়শ্চারাইজড থাকে। এই হাইড্রা ফেসিয়ালের ক্ষেত্রে মূলত ব্যবহার করা হয় প্রচুর পরিমাণে সিরাম। বিভিন্ন ধরনের হাইড্রা ফেসিয়াল হয়। নরম্যাল হাইড্রা ফেসিয়ালের সঙ্গে রয়েছে অ্যাকনি প্রোন স্কিন অর্থাৎ যাঁদের ত্বকে ব্রনর সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য স্পেশ্যাল হাইড্রা ফেসিয়াল। এছাড়াও স্কিন গ্লো অর্থাৎ ত্বকের জেল্লা বাড়ানোর জন্য গ্লো বুস্ট ভিটামিন সি হাইড্রা ফেসিয়াল, কেউ একটু স্কিন টোন আপ করতে চাইলে তার জন্য রয়েছে হোয়াইটনিং হাইড্রা ফেসিয়াল, স্কিন টাইটনিংয়ের জন্য রয়েছে রেটিনল হাইড্রা ফেসিয়াল। এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি-ট্যান হাইড্রা ফেসিয়াল। 


ত্বকের একদম গভীর স্তরে হাইড্রা ফেসিয়াল মেশিনের সাহায্যে সিরাম পৌঁছে দেওয়া হয় এই পদ্ধতির সাহায্যে। তার ফলে ত্বকের যেসমস্ত টিস্যু ডিহাইড্রেটেড হয়ে গিয়েছে সেগুলি হাইড্রেটেড হয়ে যায়। এছাড়াও হাইড্রা ফেসিয়ালের সাহায্যে কিছু জেল ব্যবহার করে তা ত্বকের অভ্যন্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর ব্যবহার করা হয় এলইডি মাস্ক, যা আমাদের ত্বকে এই সিরাম এবং জেল অর্থাৎ হাইড্রেশন লক করে বা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। ১৫ থেকে ২০ দিন এই এলইডি মাস্কের সাহায্যে ত্বকের মধ্যে হাইড্রেশন লক করা সম্ভব হয়। এছাড়াও বাড়িতে কিছু সতর্কতা তো নিতে হবে। ত্বকের বিভিন্ন ধরন অনুসারে হাইড্রা ফেসিয়াল করার সময় সিরাম বেছে নেওয়া হয়। এই ফেসিয়াল একটু সময়সাপেক্ষ। সায়ন্তন জানিয়েছেন অন্তত ৫০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। যেহেতু অনেকগুলো পর্যায় রয়েছে তাই এই ফেসিয়াল করার জন্য হাতে একটু সময় রাখা ভাল। ১৫ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত হাইড্রা ফেসিয়ালের প্রভাব ত্বকে বেশ ভালভাবে বোঝা যাবে। খরচ শুরু হয় ১৮০০-১৯০০ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ হয় ৩২০০-৩৩০০ টাকা। এটা অনেকটাই নির্ভর করে ত্বকের ধরন এবং তার সমস্যার উপর। 


হাইড্রা ফেসিয়ালের চটজলদি উপকারিতা



  • ত্বকের একদম গভীর স্তরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।

  • ওপেন পোরসের সমস্যা থাকলে তা একটা সেটিংয়েই অনেকটা কমবে।

  • সর্বোপরি ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে এবং জৌলুস বজায় থাকবে। 


আরও পড়ুন- পুজোর আগে শেষমুহূর্তে চুলের পরিচর্যা, করাতে পারেন 'হেয়ার বোটক্স', খুঁটিনাটির হদিশ দিলেন বিশেষজ্ঞ