নয়াদিল্লি: ধুলোঝড়ে বেসামাল অবস্থা রাজধানী দিল্লির। ধুলোঝড়, ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা রাজধানী সংলগ্ন এলাকাগুলিরও। দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একাধিক বিমানের উড়ন পিছিয়ে হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে পিছিয়েও দেওয়া হয়েছে কয়েকশো বিমানের উড়ান। ফলে বিমানবন্দের ভিড় উপচে পড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এই মুহূর্তে। (Delhi Dust Storm)

শুক্রবার সন্ধেয় হঠাৎ ধুলোঝড়ের কবলে পড়ে দিল্লি। আর তার পর পরই তীব্র গতিতে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিতে বেসামাল অবস্থা হয়। আচমকা আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে তীব্র গরমের পর সামান্য স্বস্তি যেমন মেলে, তেমনই দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দিল্লি বিমানবন্দরে ২০৫টি বিমানের উড়ান পিছিয়ে যায়। প্রায় ২৫টি বিমান অবতরণের কথা থাকলেও, দিল্লিতে নামতে পারেনি সেগুলি। বরং ঘুরিয়ে অন্য বিমানবন্দরে নামানো হয় সেগুলিকে। (Dust Storm in Delhi)

শনিবার দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। প্রত্যেক বিমানই দেরিতে ছাড়ছে, অন্তত এক ঘণ্টা করে দেরি হচ্ছে। ফলে বিমানবন্দের যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ছে।  Air India এবং IndiGo-র মতো বিমান সংস্থা সেই নিয়ে নির্দেশিকা জারি করলেও, অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সংবাদমাধ্যমে একযাত্রী বলেন, "শ্রীনগর থেকে মুম্বই যাচ্ছিলাম। মাঝে দিল্লিতে স্টপ ছিল। কথা ছিল, সকাল ৬টায় দিল্লিতে নামবে বিমান। কিন্তু বিমান ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় চণ্ডীগড়। এর পর বেলা ১১টায় দিল্লিতে এলাম। ১২টার সময় মুম্বই যাওয়ার বিমানে উঠেও পড়লাম। কিন্তু তার পর চার ঘণ্টা ঠায় বসে থাকতে হল। ফের নামানো হল বিমান থেকে। আবার সিকিওরিটি চেক হল। এখনও বিমানবন্দরে বসে রয়েছি। বিমান এখনও ছাড়ছে না।"

৭৫ বছর বয়সি এক বিমানযাত্রী হুইলচেয়ারবন্দি। তিনি বলেন, "১২ ঘণ্টা ধরে বসে রয়েছি। ধুলোঝড়ের জন্য প্রথমে দিল্লিতে নামতেই পারিনি। গতকাল রাত থেকে বসে রয়েছি বিমানবন্দরে।" দিল্লি বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন যাত্রীরা। বিমানবন্দরে চরম অব্যবস্থার অভিযোগ করছেন সকলে। কর্তৃপক্ষের তরফে যাত্রীদের সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে না, কোনও রকম সাহায্য়ও করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিশ্বমানের বিমানবন্দর বলে প্রচার করা হলেও, দিল্লি বিমানবন্দরের চেয়ে সাধারণ বাসস্ট্যান্ডও ভাল বলে সোশ্য়াল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকে। বিমানবন্দরে মেঝেতে বসে রয়েছেন যাত্রীরা। প্রচণ্ড ভিড়ে পদপিষ্ট হওয়ার জোগাড় বলেও দাবি সামনে এসেছে।

ধুলোঝড় এবং দুর্যোগের কবলে পড়ে রাজধানীর রাস্তাঘাটের অবস্থাও বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তার  উপর গাছ উপড়ে পড়েছে জায়গায় জায়গায়। গাড়ির উপরও ভেঙে পড়েছে গাছ। ফিরোজ শাহ রোড, অশোক রোড, মাণ্ডি হাউজ, পটেল মার্গ, জোর বাগ, কালকাজি, শাহদরা, কনাট প্লেসেও গাছ ভেঙে পড়েছে রাস্তায়। উত্তর দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকা, নারেলা থেকে বাওয়ানা, বদলি থেকে মঙ্গলপুরী বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে। সেখানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। বাতিস্তম্ভ এবং বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে গিয়েছে কোথাও কোথাও। আজও দিল্লিতে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।