নয়াদিল্লি: দিল্লিতে ভূমিকম্প (Delhi)। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী শহরের পাশাপাশি উত্তর ভারতের একাধিক জায়গায় কম্পন অনুভূত হয়েছে । ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের তরফে জানানো হয়েছে দিল্লি শহর-সহ উত্তর ভারতের কম্পনের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫.৪। জানা গিয়েছে, জম্মু কাশ্মীরের ডোডা জেলার গান্দোহ ভালেসা গ্রামে থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে, ৩০ কিলোমিটার গভীরে এই কম্পনের উৎপত্তি হয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লির পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরে শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দিল্লি ছাড়াও পাঞ্জাব এবং হরিয়ানাতে অনভূতি হয়েছে কম্পন। ট্যুইট করে ভূমিকম্পের বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছে ন্যশানাল সেন্টার ফর সিসমোলজি। ট্যুইটে জানানো হয়েছে ভূমিকম্প হয় মঙ্গলবার দুপুর ১টা বেজে ৩৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে।
উল্লেখ্য, দিল্লি, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবে অনুভূত ভূমিকম্পে কোনও ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, শুধু ভারত নয়, এই কম্পন অনুভূত হয়েছে পাকিস্তান এবং চিনেও।
আগেও ভূ-কম্পন দিল্লিতে: গত ২১ মার্চ, দিল্লিতে ফের ভূমিকম্প (Earthquake in Delhi) হয়। রিখটার স্কেলে তীব্রতা ২.৭। রাতের পর ফের বিকেল ৪টা নাগাদ কাঁপল দিল্লি। গতকাল ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল আফগানিস্তান। জানা গিয়েছিল, ভূকম্পনের কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তান। কেঁপে উঠেছিল ভারতের দিল্লি, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, কাশ্মীর। ভূমিকম্পের জেরে কেঁপে উঠেছিল চিন, তাজাকিস্তান, কাজাকস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান। গতকাল হঠাৎ করে ভূমিকম্পের ধাক্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দিল্লি-এনসিআরের বাসিন্দারা। বাড়ি ছেড়ে বেশিরভাগ মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়।
ভারতে আরও বাড়বে ভূমিকম্প? চলতি বছরের শুরুতেই ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে শক্তিশালী ভূকম্প (Earthquake) অনুভূত হয়েছে। ২১ মার্চ যেমন ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল দিল্লি (Delhi)। যদিও কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তান (Afghanistan)। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুসারে, আফগানিস্তানের ফয়জাবাদে রাত ১০টায় রিখটার স্কেলে প্রায় ৭.৫ মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর কম্পন পাকিস্তান এবং জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য জুড়ে অনুভূত হয়েছিল।
কোন কোন অঞ্চলে লাল সতর্কতা রয়েছে? এরপরই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ঘন ঘন কম্পন এবং ভূমিকম্প হতে পারে ভারতের একাধিক এলাকায়। বিশেষ করে হিমালয় অঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য। ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। ২০২২ সালের একটি সমীক্ষা বলছে যে হিমালয় অঞ্চলটি ভূমিকম্পের দিক থেকে সবচেয়ে সক্রিয়।
হিমালয়ের কোলে অতিরিক্ত বাড়ি বা বড়-বড় হোটেল এবং তার থেকে সৃষ্ট দূষণও যে ভূ-পৃষ্ঠের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেটিও ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূ-বিশেষজ্ঞরা। যে কোনও সময় হিমালয় অঞ্চলে অনেক বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুঃখজনক বিষয় হল ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় না। টেকটোনিক প্লেটগুলি যখন শক্তি ছেড়ে দেয় তখনই ভূমিকম্প হয়। ফলে জনসধারণকে সতর্ক করে দেওয়ার উপায় থাকে না।