কেঁপে উঠল ভারতের পার্বত্য উত্তরাঞ্চল। গভীর রাতে ভূমিকম্প অনুভূত হল ভূস্বর্গে। লে-লাদাখের থেকে কার্গিল এক ধাক্কায় কাঁপল বিরাট এলাকা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.২। রাত ২.৫০ মিনিটে কয়েক মুহূর্ত ধরে চলে এই কম্পন। কার্গিলের সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র লে-লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীরে এই কম্পন অনুভূত হয়।
জাতীয় ভূমিকম্প বিজ্ঞান কেন্দ্রের ( National Center for Seismology ) মতে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ১৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল। এই ভূমিকম্পের তিন ঘন্টা পরেই উত্তর-পূর্ব ভারতেও কম্পন অনুভূত হয়। অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম কামেং অঞ্চলে ৪.০ মাত্রার ভূমিকম্প মাপা হয় সকাল ৬টায়। অন্যদিকে ১৩ মার্চ দুপুর ২ টোয় তিব্বতেও ৪.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
লে এবং লাদাখে ভূমিকম্পের ঘটনা ঘন ঘন ঘটে
লেহ লাদাখ এমনিই ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। লেহ এবং লাদাখ উভয়ই দেশের Seismic Zone-IV-এ অবস্থিত, যার অর্থ ভূমিকম্পের ঝুঁকির দিক থেকে এই অঞ্চল অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। হিমালয়ের যে অঞ্চল টেকটোনিকভাবে সক্রিয়, লে এবং লাদাখ সেখানেই অবস্থান করছে
গত মাসেও একাধিক জায়গায় ভূমিকম্প হয়েছে। কখনও কেঁপে উঠেছে দিল্লি, কখনও বাংলা, বিহার আবার কখনও উত্তপূর্বাঞ্চল। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সকাল ভূমিকম্পে ঘুম ভাঙে রাজধানী দিল্লির, সঙ্গে বিকট শব্দ। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪। উৎসস্থল ছিল দিল্লির ধৌলাকুঁয়ার কাছে মাটির পাঁচ কিলোমিটার গভীরে। আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে লোকজন। কেঁপে ওঠে বিহারের সিওয়ানও।
এরপরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে কেঁপে ওঠে কলকাতা। কম্পন অনুভূত হয় ওড়িশা ও বাংলাদেশেও। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.১। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল কলকাতা থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯১ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎস। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, সেদিন সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। কলকাতা, দমদম, ডায়মন্ড হারবার-সহ দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া-সহ উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। তবে ভূমিকম্পে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ফেব্রুয়ারি মাসের একদম শেষে কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে কেঁপে ওঠে দুই প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও পাকিস্তান। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, সেদিন রাত ২.৫১ নাগাদ নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.১। ভূমিকম্পের উৎসস্থল সিন্ধুপালচক। কম্পন অনুভূত হয় ভারত, তিব্বত ও চিন সীমান্তেও। পরপর ভূমিকম্পের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।