নয়াদিল্লি: এবার গাজার (Gaza Situation) পরিস্থিতি একেবারে স্বচক্ষে দেখার সময় এসে গিয়েছে, ইজরায়েলের সেনাকে বার্তা দিলেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী (Israel Minister Of Defence) ইয়োভ গালান্ট। তাঁর দফতরের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা, 'এত দিন গাজাকে দূর থেকে দেখতেন। এবার একেবারে ভিতর থেকে দেখবেন। নির্দেশ আসছে।' তার মানে কি পুরোদস্তুর 'গ্রাউন্ড অ্যাসল্ট'-এ তৈরি আইডিএফ? এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও ইঙ্গিত সেরকমই। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই ইজরায়েলে সফরে গিয়েছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক (British PM Rishi Sunak At Israel)। 



সাংবাদিক বৈঠক... 
এখন অশুভ শক্তির সঙ্গে শান্তিকামী শক্তির, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনককে পাশে নিয়ে বৃহস্পতিবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এই বার্তাই দিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু। বললেন, 'হামাস আসলে বর্বরদের আধুনিক সংস্করণ, এই গ্রহের নিকৃষ্টতম শয়তান।' পাশে বসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও বলেন, 'ইজরায়েল তো বটেই, কোনও দেশেরই এমন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাওয়া উচিত নয়।' পাশাপাশি এও জানিয়ে দেন, ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করে ব্রিটেন। তবে লক্ষণীয় বিষয়, এই অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রাখার কথাও শোনা গিয়েছে ঋষি সুনকের মুখেও। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই রাতের দিকে মিশর জানায়, তারা রাফাহ সীমান্ত খুলে দেবে। গাজায় ত্রাণ প্রবেশের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছে মিশর।


আর যা...
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে অশনি সঙ্কেত শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা। তাদের মতে, একচিলতে ভূখণ্ডের যা দশা তা অবিলম্বে মোকাবিলা না করা হলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। প্যালেস্তিনীয় প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত গাজা স্ট্রিপে ৩ হাজার ৭০০ জনের প্রাণ গিয়েছে। তার উপর হালে সেন্ট্রাল গাজার হাসপাতালে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের অভিযোগে নতুন করে টালমাটাল হয়েছে পরিস্থিতি। হামাস এর জন্য প্রথমে আইডিএফের দিকে আঙুল তুললেও পরে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। আপাতত সন্দেহের তির ইসলামিক জিহাদ সংগঠনের দিকে। এর মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ইজরায়েল সফর। এদিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ঋষি সুনককে আরও জানান, হামাসের হামলায় অন্তত ৯ জন ব্রিটিশ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ ৭ জন। 


রাফাহ সীমান্ত নিয়ে...
গাজায় ত্রাণ পৌঁছনোর ব্যাপারে কয়েক দিন আগেই সুর নরম করেছিল ইজরায়েল। জানিয়েছিল, শর্তসাপেক্ষে ত্রাণ ঢুকতে দিতে রাজি তারা। কিন্তু এও জানানো হয়েছিল, কোনও ভাবে হামাস এতে বাধা দিলে তারা সেই মুহূর্তে ত্রাণ পৌঁছনোর কাজ বন্ধ করে দেবে। এই প্রসঙ্গে তেল আভিভ নতুন জানিয়েছে, ত্রাণ প্রবেশে তারা তাদের দিকের সীমান্ত খুলতে রাজি নয়। গাজার জন্য ত্রাণ এলে মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়েই তা ঢুকবে, জানিয়ে দেয় নেতানইয়াহুর প্রশাসন। এদিন মিশর জানায়, আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজার জন্য ত্রাণ যাবে। এর মধ্যেই এর জন্য ২৫টি ট্রাক তৈরি রয়েছে। নির্বিঘ্নে যাতে সমস্ত সামগ্রী বিধ্বস্ত ভূখণ্ডে পৌঁছে যেতে পারে, সে জন্য সড়ক মেরামতি ও পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গাজার ধ্বংসের ছবি বদলাচ্ছে না। এখনও এয়ার স্ট্রাইক জারি রেখেছে ইজরায়েল। বলবৎ রয়েছে অবরোধ। ফলে জল-খাবার-জ্বালানিহীন সাধারণ মানুষের জীবন নরকের থেকেও খারাপ।