উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, হাওড়া: দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির গবেষকদের তৈরি নতুন ধরনের অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে হাওড়ার সঞ্জীবন হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষা সফল হলে অনেক কম দামেই তৈরি করা যাবে এই যন্ত্র। কীভাবে গবেষণা চলছে, কোভিড ওয়ার্ডে গিয়ে খতিয়ে দেখল এবিপি আনন্দ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশজুড়ে সংক্রমণের সুনামি। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গোয়ার হাসপাতালগুলিতে তীব্র অক্সিজেনের হাহাকার। এ’রাজ্যেও বেশকিছু ক্ষেত্রে একই অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে, দুর্গাপুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা এনআইটি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন ধরনের অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের পরীক্ষামূলক গবেষণা শুরু করল হাওড়ার সঞ্জীবন হাসপাতাল। নতুন ধরনের এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটরটি তৈরি করেছেন এনআইটি-র গবেষকরা। আর তার পরীক্ষামূলক গবেষণা চলছে সঞ্জীবন হাসপাতালে।
সঞ্জীবন কোভিড হাসপাতালের ডিরেক্টর শুভাশিস মিত্র বলেন, কনসেনট্রেটর নতুন কিছু নয়, কিন্তু করোনা রোগীদের উপর এই প্রথম আমরা গবেষণা করছি। .সাড়ে তিনশো রোগীর উপর সাত দিন ধরে চলবে এই গবেষণা।
কীভাবে চলছে এই গবেষণা? চিকিৎসকদের মতে, গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ব্যবহার করা যায় না। বদলে যাঁরা কম অসুস্থ, যাঁদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নব্বইয়ের আশপাশে রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। শুভাশিস মিত্র জানান, এক রোগীর ভর্তির সময় অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল ৮৮। পনেরো মিনিট দেওয়ার পরই অক্সিজেন ৯৮-তে পৌঁছেছে।
কীভাবে কাজ করে নতুন ধরনের এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর? বাতাসের অক্সিজেন নিয়ে, সেটাকে বাড়িয়ে ৯২-৯৩ শতাংশে তুলে দেয় এই মেশিন। এই মেশিনের সুবিধা হল, কোনও সিলিন্ডারের প্রয়োজন নেই। শুভাশিস মিত্র জানান, এনআইটি এটা তৈরি করেছে, আমরা এখানে পরীক্ষা করছি। বাজারে এই ধরনের কনসেনট্রেটরের দাম প্রায় ১ লক্ষ টাকার বেশি। এটা ২০-২৫ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি করা সম্ভব হবে। সরকারের কাছে দাবি করব, মধ্যবিত্ত যেন কিনতে পারে তার জন্য সাবসিটি দিক। অক্সিজেনের হাহাকারের মধ্যে, নতুন এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর গবেষণায় উত্তীর্ণ হলে, বহু মানুষের জীবন বাঁচবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।