মুম্বই: ‘প্রয়াত ইন্দিরা গাঁধী মুম্বইয়ের অন্ধকার দুনিয়ার এককালের ডন করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন’, এহেন চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন সঞ্জয় রাউত। কংগ্রেসের একাধিক নেতার তীব্র প্রতিবাদের জেরে অবশেষে সুর নরম করেছেন তিনি। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে অপরাধ জগতের মাথাদের ঘনিষ্ঠতা প্রসঙ্গে বুধবার এক অনু্ষ্ঠানে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর লালার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে দাবি করেন শিবসেনার শীর্ষনেতা রাউত। বলেন, একটা সময় ছিল যখন ছোটা শাকিল, দাউদ ইব্রাহিম, শারদ শেট্টিরা ঠিক করে দিত, কে হবেন মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার, কে মন্ত্রালয়ে বসবেন। ইন্দিরা গাঁধী দক্ষিণ মুম্বই গিয়ে করিম লালার সঙ্গে দেখা করতেন।




পাল্টা রাউতের বক্তব্য খারিজ করে মুম্বই কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান মিলিন্দ দেওরা ট্যুইট করেন, ইন্দিরাজি প্রকৃত দেশপ্রেমিক ছিলেন, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কখনও আপস করেননি। মুম্বই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে দাবি করছি, সঞ্জয় রাউত ঠিকঠাক তথ্য না জানা বিবৃতি ফিরিয়ে নিন। যে প্রধানমন্ত্রীরা প্রয়াত হয়েছেন, তাঁদের ঐতিহ্য বিকৃত করা থেকে সংযত থাকা উচিত রাজনৈতিক নেতাদের। ইন্দিরা সম্পর্কে ‘মিথ্যা প্রচার’ অব্যাহত রাখলে রাউতকে ‘অনুতাপ’ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন আরেক কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম।
মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, শিবসেনা, এনসিপির জোট সরকার চলছে। শরিকি সংসারে অশান্তির ঝড় তুলতে যাচ্ছিল ইন্দিরা সম্পর্কে রাউতের মন্তব্য। রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্ব শিবসেনার সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে রাউতের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁকে তা প্রত্যাহার করে নিতে বলার দাবি তোলে।



শেষ পর্যন্ত রাউত ট্যুইটে দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী, রাজীব সাতভকে ট্যাগ করে লেখেন, করিম লালা পাঠান সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন। পাখতুন-ই-হিন্দ নামে একটি সংগঠন চালাতেন। পাঠান গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে ইন্দিরা গাঁধী সমেত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন। তবে মুম্বইয়ের ইতিহাস যারা জানে না, তারা আমার বক্তব্য বিকৃত করছে। কখনই লৌহসদৃশ কঠিন ইন্দিরা গাঁধীর প্রশংসা করতে দ্বিধা করিনি। উনি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। আশ্চর্য্যের বিষয়, যারা ইন্দিরাজির ইতিহাস জানে না, তারাই গলাবাজি করছে!
তিনদলের জোট মহারাষ্ট্র বিকাশ আঘাদি সরকার তৈরি হয় নভেম্বরে। শিবসেনা হিন্দুত্ব নিয়ে বরাবরের অবস্থান লঘু করতে, একবগ্গা কংগ্রেস-বিরোধিতা ছাড়তে রাজি হয়। তারপরই উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সামনে রেখে জোট সরকারে সম্মতি দেয় কংগ্রেস।