কেপ ক্যানাভেরাল (ফ্লরিডা):আর কয়েক ঘণ্টা!তার পর আক্ষরিক ও বৈজ্ঞানিক, সব অর্থেই পৃথিবীর 'মায়া'কাটিয়ে চাঁদের দিকে যাত্রা শুরু করবে নাসার 'আর্তেমিস ১'। সেই সঙ্গেই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার স্বপ্নের 'ডিপ স্পেস এক্সপ্লোরেশন'-র  প্রথম পর্বও শুরু হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে সাজো সাজো রব ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে। সেখানকার 39B লঞ্চপ্যাড থেকেই রওনা দেওয়ার কথা 'আর্তেমিস ১'-র। 


অভিযানের খুঁটিনাটি...
ভারতীয় সময় অনুযায়ী, আজ সন্ধে ৬টা ৩ মিনিট থেকে ৮টা ৩ মিনিটের মধ্যে কেনেডি স্পেস সেন্টারের 39B লঞ্চপ্যাড থেকে রওনা দেওয়ার কথা 'আর্তেমিস ১'-র।  এই বিশেষ চন্দ্রাভিযানের প্রথম পর্বে 'ওরিয়ন স্পেসক্রাফট', 'স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট' এবং সুনির্দিষ্ট গ্রাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করছে নাসা। তবে 'আর্তেমিস ১'-এ কোনও মহাকাশচারী থাকছেন না। এটি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার  'ডিপ স্পেস এক্সপ্লোরেশন-র একেবারে গোড়ার পর্ব। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক হলে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে প্রথম মহিলা নভোচর পাঠাবে নাসা। ওই বছরেই কোনও অ-শ্বেতাঙ্গ মহাকাশচারীকেও চন্দ্রপৃষ্ঠে দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে নাসার বিশালাকার এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন স্পেসক্রাফট-এ চড়ে চাঁদের বৃত্তে পৌঁছে যাবেন মহাকাশচারীরা। তার পর সেখান থেকে তাঁরা SpaceX's Human Lander System (HLS) করে চাঁদের বরফাবৃত দক্ষিণ গোলার্ধে যাতায়াত করতে পারবেন। সার্বিকভাবে এর মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে নতুন প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করতে চায় নাসা। সাফল্য এলে ভবিষ্যতে সেখান থেকে  মঙ্গল-অভিযানের প্রস্তুতি নেবেন বিজ্ঞানীরা। 



নজরে 'আর্তেমিস ১'





  • নাসার 'ডিপ স্পেস এক্সপ্লোরেশন'-র অন্যতম অভিযান

  • তিনটি ধাপ রয়েছে 'আর্তেমিস মুন মিশন'-র

  • ভারতীয় সময় সন্ধে ৬টা ৩ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে প্রথম ধাপের চূড়ান্ত পর্যায়

  • রওনা দেবে 'আর্তেমিস ১ '

  • এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন ক্য়াপসুলের পরীক্ষামূলক ব্যবহার হবে এই পর্যায়ে

  • প্রথম ধাপে থাকছেন না কোনও মহাকাশচারী

  • এই পর্যায়ে সাফল্য এলে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে প্রথম মহিলা নভোচর পাঠাবে নাসা

  • রয়েছে চাঁদ থেকে মঙ্গল-অভিযানের পরিকল্পনাও



লক্ষ্য় কী?
আর্তেমিস চন্দ্রাভিযানের প্রথম পর্ব আসলে একটি পরীক্ষামূলক অভিযান। এসএলএস রকেটের মাথায় বসিয়ে ওরিয়ন স্পেসক্রাফটি মহাকাশে পাঠানো হবে এই পর্বে। মহাকাশের নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে 'ওরিয়ন ক্যাপসুল' বিজ্ঞানীদের হিসেব মতো কাজ করতে পারছে কিনা, সেটাই দেখে নেওয়া হবে এই পর্বে। যদি এই পর্বে সাফল্য আসে, তবেই বাকি দুই ধাপে এসএলএস রকেট এবং ওরিয়ন ব্যবহার করার ছাড়পত্র মিলবে। সেই দুটি পর্বে মহাকাশচারীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করবে নাসা। 


আর্তেমিস ১-র মেয়াদ...
নাসা জানিয়েছে,অভিযানের  প্রথম পর্বের মেয়াদ ৪২ দিন ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটে চেপে রওনা দেবে ওরিয়ন। মানুষের তৈরি যে কোনও মহাকাশযানের থেকে বেশি দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার কথা তার। অঙ্কের নিরিখে পৃথিবীর থেকে সাড়ে চার লক্ষ কিলোমিটার দূরে যাবে সে। দ্রুত ফিরেও আসার কথা তার। তবে ভয়ঙ্কর তেতে উঠবে ওরিয়ন। ফেরার পথে তার তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে ২৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। 


নামকরণ...
গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী, চাঁদের দেবী আর্তেমিস। তিনি অ্যাপলোর যমজ বোন-ও। তাঁর নামেই এই অভিযানের নাম রেখেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। পৌরাণিক বিশ্বাসে ভর করে নামাঙ্কিত অভিযান কতটা সফল হবে? প্রথম পরীক্ষা আজই।


আরও পড়ুন:খরচ বাড়বে, আর্থিক সমস্যা দেখা দিতে পারে সিংহের ; এসপ্তাহে কী আছে আপনার ভাগ্যে ?