প্যারিস: ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্য়াক্রঁর ইসলামভীতি নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্য ও পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাল্টা জবাব ঘিরে বিতর্কের আবহেই চরম পদক্ষেপ করল ফ্রান্স। ফরাসি প্রেসিডেন্ট একদিকে স্পষ্ট করেছেন, তিনি মুসলিম দুনিয়ার দেশগুলির ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাকের মুখে কিছুতেই মাথা নত করবেন না, অন্যদিকে ১৮৩ জন পাকিস্তানি নাগরিকের ভিজিটর ভিসা বাতিল করেছে ফ্রান্স, যাঁদের মধ্যে আছেন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুজা পাশার আত্মীয়স্বজনরা। এছাড়া জোর করে ১১৮ জন পাকিস্তানিকে তাদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছে ফ্রান্স। বলা হচ্ছে, ইমরান যে কড়া ভাষায় ম্যাক্রঁ ও ফ্রান্সের সমালোচনা করেছেন, তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ আছে ফ্রান্স সরকারের এতটা কঠোর প্রতিক্রিয়ার।
এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে প্যারিসের পাকিস্তান কনস্যুলেট ফ্রান্সকে আবেদন করেছে, যাতে প্রাক্তন আইএসআই প্রধানের বোনকে সাময়িক সেদেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়, কেননা তিনি অসুস্থ শাশুড়িতে দেখতে ফ্রান্স এসেছেন। পাকিস্তানের অভিযোগ, ১১৮ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও। এব্যাপারে তারা ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
গত মাসে ক্লাসে পয়গম্বর হজরত মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র দেখানোয় প্রকাশ্যে প্যারিস শহরতলির স্কুলের বাইরে গলা কেটে স্যামুয়েল পেটি নামে এক শিক্ষককে হত্যা করে চেচেন বংশোদ্ভূত যুবক। ম্যাক্রঁ এঘটনার তীব্র নিন্দা করে ইসলামি সন্ত্রাসবাদ, কট্টরপন্থী ইসলামের বিরুদ্ধে সরব হলে পাল্টা তাঁকে একহাত নেয় তুরস্ক, পাকিস্তান। মুসলিম দুনিয়া ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। ইমরান ইসলামি দেশগুলিকে চিঠি লিখে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন। বলেন, ইসলাম সম্পর্কে আতঙ্কে ভোগা পশ্চিমী দুনিয়ার নেতাদের সঠিক রাস্তায় আনতে হসে মুসলিম দেশগুলির জোট বাঁধা প্রয়োজন।
যদিও ইমরান সম্প্রতি চিনের টিভি চ্যানেল সিসিটিভি-তে সম্প্রচারিত এক টিভি সিরিজে পয়গম্বর মহম্মদের ছবি দেখানো হলেও তা নিয়ে একটি কথাও বলেননি। চিনা প্রশাসন বা টিভি চ্যানেলটি মহম্মদের ছবি প্রদর্শনের কথা অস্বীকার করেনি। অর্থাত এতে তাদের কোনও আপত্তি নেই, এটাই বুঝিয়েছে। তা সত্ত্বেও বিরোধিতা করেননি ইমরান।