কলকাতা: 'এটা ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক নয়, এখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা... জায়গাটার নাম গাজা', তুমুল সাড়া জাগানো ওয়েব সিরিজ 'ফওদা'-র (Fauda Star Lior Raz) এই সংলাপ অনেকের মেরুদণ্ড দিয়েই হিম ঠান্ডা স্রোত বইয়ে গিয়েছিল। পর্দার সে সংলাপ যে অতিকথন ছিল না, তা এখন হয়তো বুঝতে পারছেন কেউ কেউ। মিল শুধু এখানেই নয়। 'ফওদা'-র অন্যতম প্রধান চরিত্র ডোরন কাবিলিও 'রিল লাইফে' শত সতর্কবার্তায় কান না দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিপজ্জনক মিশনে। বাস্তবে এক পথ ধরলেন ডোরন চরিত্রের অভিনেতা লিওর রাজ (Lior Raz In Israel Palestine War)। হামাসের রকেট হামলায় আটকে পড়া দুই পরিবারকে বাঁচাতে পৌঁছে গেলেন দক্ষিণ ইজরায়েলের (Actor Lior Raz In Extraction Mission) Sderot শহরে।


কী দেখা গেল?
প্রায় ১১ ঘণ্টা আগে ইনস্টা পেজে একটি 'রিল' পোস্ট করেছেন অভিনেতা লিওর রাজ। দেখা যাচ্ছে, এক সঙ্গীর সঙ্গে বাঙ্কারের মতো কোথাও একটা মাথা গোঁজার আশ্রয় নিয়েছেন অভিনেতা। উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে রকেট। ক্যাপশনে লেখা, 'ইয়োহানান প্লেসনারের সঙ্গে রয়েছি!!! অভি ইসিসাসচারভকে নিয়ে দক্ষিণের দিকে এসেছিলা। ইজরায়েলের দক্ষিণ দিকে জনপদগুলিকে সাহায্য করতে লাগাতার কাজ করে চলা 'ব্রাদার ইন আর্মস'-র মতো স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে যোগ দিতেই এখানে আসা। বোমা বিধ্বস্ত দক্ষিণ ইজরায়েলের Sderot শহরে আটকে পড়া দুটি পরিবারকে উদ্ধার করতে আমাদের পাঠানো হয়েছে।'






কেন হইচই?
'ফওদা' শব্দটির অর্থ তুমুল গণ্ডগোল বা কেওস (chaos)। ২০১৫ সালে 'ফওদা' নামে ইজরায়েলি সিরিজটির প্রথম প্রিমিয়ার হয়। সিরিজটির প্রেক্ষাপট জুড়ে ছিল আরব-ইজরায়েল সংঘর্ষ। ডোরন কাবিলিওড সেখানে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের অন্যতম সেরা সদস্য। ইজরায়েলের শত্রুদের শেষ করতে একের পর এক বিপজ্জনক, জীবন বাজি রাখা মিশনে কী ভাবে সে জয়ী হয়, এই নিয়েই  'ফওদা' সিরিজের একের পর এক সিজনের গল্প। তবে সংঘর্ষের পাশাপাশি কার্যত একই সঙ্গে এই সিরিজ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মানবিক সম্পর্ক, মূল্যবোধ ইত্যাদির প্লটও। শুধু তাই নয়। ইজরায়েলের তরফে দাবি করা হয়, এই প্রথম প্যালেস্তাইনের দিকের কথাও বলার চেষ্টা হয়েছে। যদিও সে দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়। পর্দার সেই ডোরন অর্থাৎ লিওর রাজকে এবার বাস্তবেও যুদ্ধের পটভূমিতে দেখতে পেল গোটা বিশ্ব।


অভিনেতা ও প্রশিক্ষিত সেনা...
লিওর শুধু বিখ্যাত অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকারই নন। ইন্টারনেট জানাচ্ছে, অভিনয় জগতে আসার আগে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সে রীতিমতো কাজ করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের একাংশের বক্তব্য, ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের অত্যন্ত দক্ষ সন্ত্রাসদমন শাখা হিসেবে পরিচিত, ইউনিট ২১৭ ওরফে 'দুভদেবান' নামে পরিচিত একটি শাখায় কাজ করতেন তিনি। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের কাছে রামাল্লা শহরের বাইরে পোস্টিং ছিল তাঁর। আরও একটি বিষয় শোনা যায় তাঁর সম্পর্কে। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে ঝরঝরে আরবি ভাষায় কথা শুনতে অভ্যন্ত অভিনেতা, এমনকি পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের গানবাজনা শোনা হত তাঁর বাড়িত। সেই অভিজ্ঞতা পরে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সে কাজের সময় বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল কি? তেমনও শোনা যায়। তবে আইডিএফের অভিজ্ঞতা যে তিনি পরে অভিনয় জীবনে কাজে লাগিয়েছিলেন, সেটা স্পষ্ট।
সেই পর্দার অভিজ্ঞতা ফের এবার বাস্তব লিওর নাকি ডোরনের জীবনে?


আরও পড়ুন:সাইরেনের শব্দ ভেদ করে পরপর বিস্ফোরণ, মৃত্যু ছাড়াল ১৬০০! আরও রক্তক্ষয়ের হুঁশিয়ারি হামাসের