বিশাখাপত্তনম : অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেল থোক ৮৫ লাখ টাকা । একটি বহুজাতিক সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের থেকে অভিনব উপায়ে টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। সিবিআই, কাস্টমস ও নারকোটিকস ডিপার্টমেন্টের অফিসার পরিচয় দিয়ে এমন ভাবে পাতা হয়েছিল ফাঁদ, ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ওই ব্যক্তি। আর এই পুরো কথাবার্তাটাই হল অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপ-এ। 


অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সাফ হয়ে যাওয়ার ঘটনা মাঝেমধ্যে শোনা যায়। তবে এক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হয় চেকে। আর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়  রানা গার্মেন্টস নামে এক কোম্পানির অ্যাকাউন্টে।দিল্লির এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে রয়েছে তাদের এই অ্যাকাউন্ট। প্রতারণার অভিযোগ প্রথমে করা হয় বিশাখাপত্তনমে। সেই এফআইআর অনুসারে, রানা গার্মেন্টসের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা ভাগে ভাগে ১০৫ টি অ্যাকাউন্টে চালান করা হয়েছে সেই টাকা।দিল্লি উত্তমনগরের HDFC Bank এর তরফেও পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে বলে এনডিটিভিকে জানিয়েছেন ব্যাঙ্কেরই এক কর্মচারী।  


প্রতারণার শিকার ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁর চাকরি জীবনে আরও তিন বছর বাকি ছিল। কিন্তু তিনি "আমার তিন স্বেচ্ছাবসর নেন। ২ মে অবসর নেন ওই ব্যক্তি।  ছেলের ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল ১৭ মে। কিন্তু  ১৪ মে, তাঁর সঙ্গে ওই গ্যাং যোগাযোগ করে। সিবিআই অফিসার পরিচয় দেয় তারা। তারপর তাঁকে ৮৫ লাখ টাকা পাঠাতে বলা হয়। বলা হয় রেকর্ড চেক করেই তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে। তিনিও তা করেন। তারপর আর টাকা ফেরত আসেনি। এখন অথৈ জলে ওই প্রৌঢ়। 


জার্মানির একটি ফার্মাস্যুটিকাল সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন তিনি। বিশাখাপত্তনমে অপরাধদমন শাখা মামলাটির তদন্ত করছে।   পুলিশ সূত্রে খবর,  মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং কিছু সূত্রও মিলেছে। অবসরপ্রাপ্ত অফিসারের সন্দেহ, বিশাখাপত্তনমের ব্যাঙ্কের কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিও জড়িত থাকতে পারে এই প্রতারণার ঘটনায়।  কারণ ওই গ্যাংয়ের লোকজন তাঁর প্রতিটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সব খবর জানত। তারাই ওই ব্যক্তিকে বলে, চেকটি এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে গিয়ে ফেলতে হবে। 


এফআইআর অনুসারে, অফিসারের এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অবসর গ্রহণের পর সমস্ত সঞ্চয় জমা ছিল।  তিনি মে মাসের ওই দিনে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ফোন পান।  সে নিজেকে ডিসিপি সাইবার ক্রাইম বলে পরিচয় দেয়। তিনি অবসরপ্রাপ্ত অফিসারকে হুমকি দিয়ে বলে, তাঁর নামে বেশ কয়েকটি মাদকদ্রব্য এবং টাকা তছরুপের মামলা রয়েছে। বিষয়টা আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য সে তার সিনিয়র পরিচয় দিয়ে আরেকজন ব্যক্তিকেও কলে কানেক্ট করে।  তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার হুমকি দেয় তারা। দলটির কাছে জাল পরিচয়পত্র ছিল। তখন ওই ব্যক্তি চাপে পড়ে যান ও ৮৫ লাখ টাকা ভেরিফিকেশনের জন্য দিতে রাজি হয়ে যান। এনডিটিভি সূত্রে খবর, তাঁকে টানা দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে ঘর থেকে বেরতে বা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতেও মানা করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত অফিসারকে প্রতারকরা বিশাখাপত্তনমে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শাখায় চেকটি জমা দিতে বাধ্য করে ।  জাল অফিসাররা বলে টাকা যাচাই করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তারপর আর সে-টাকা ফিরে আসেনি। 
 


আরও পড়ুন :


তৃতীয়বারও রইলেন নির্মলা, মোদির মন্ত্রিসভায় এবার মহিলা কতজন জানুন 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে