নয়াদিল্লি: কেন্দ্রে তৃতীয় বারের জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকার। রবিবার দিল্লিতে শপথ নিলেন মোদি এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এবারে মোদির মন্ত্রিসভায় সাত জন মহিলা স্থান পেয়েছেন। নির্মলা সীতারামণ রয়েইছেন। পাশাপাশি, জায়গা করে নিয়েছেন বিজেপি-র রক্ষা খাড়সে, শোভা করন্দলাজে, অন্নপূর্ণা দেবী, সাবিত্রী ঠাকুর, নিমুবেন বমভানিয়া এবং আপনা দলের অনুপ্রিয়া পটেল। এঁদের মধ্যে তৃতীয়বারের জন্য মহিলা মন্ত্রী হিসেবে মোদির মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন নির্মলা। আগের কোনও মহিলা মন্ত্রী এবারে জায়গা পাননি। (Modi Cabinet 2024)


তবে এঁদের মধ্যে একমাত্র নির্মলাই পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বাকিরা শপথ নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। এই সাতজনের মধ্যে বিজেপি থেকে আসা মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা ছয়। শরিক আপনা দল থেকে শুধু অনুপ্রিয়া এসেছেন। নির্মলা এবারও অর্থমন্ত্রকই সামলাবেন কি না, তা এখনও খোলসা করা হয়নি। বাকিরা কে কোন মন্ত্রকে জায়গা পেতে চলেছেন, তাও এখনও অস্পষ্ট। (Women Ministers in Modi Cabinet)


নির্মলা সীতারামন


দেশের প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী নির্মলা। ২০১৪ সালে প্রথম বার যখন কেন্দ্রে সরকার গড়েন মোদি, সেবারই মন্ত্রিসভায় জায়গা করেন নেন তিনি। তবে সেবার ছিলেন জুনিয়র মন্ত্রী। পরবর্তীতে স্বাধীন ভাবে বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের দায়িত্ব পান। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে দায়িত্ব হাতে পান। ২০১৯ সালে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব হাতে নেন নির্মলা। এর পর ২০১৯ সালে একেবারে অর্থমন্ত্রী পদে উন্নীত হন নির্মলা। তবে বিভিন্ন সময়ে নির্মলের একাধিক মন্তব্য বিতর্ক কুড়িয়েছে। এবারে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি নির্মলা। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবেই শপথ নিলেন।


রক্ষা খাড়সে


ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির অভিজ্ঞ নেতা একনাথ খাড়সের পুত্রবধূ রক্ষা। তাঁর স্বামী নিখিল খাড়সে জীবিত নেই। কনিষ্ঠতম সাংসদ হিসেবে, ২৬ বছর বয়সে ষোড়শ লোকসভায় সাংসদ হিসেবে জায়গা করে নেন। এবারের নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের রাবের কেন্দ্র থেকে NCP (শরদ পওয়ার) প্রার্থী শ্রীরাম দয়ারাম পাটিলে ২ লক্ষ ৭২ হাজার ১৮৩ ভোটে পরাজিত করেন।


শোভা করন্দলাজে


পরিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কর্নাটকে বিজেপি নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পার বিশ্বস্ত বলে গন্য় হোন শোভা। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০২৩ সালে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন।


অন্নপূ্র্ণা দেবী


প্রায়ত রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা রমেশ যাদবের স্ত্রী  অন্নপূর্ণা দেবী। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে পদার্পণ। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের বিধায়কও ছিলেন। ঝাড়খণ্ড হেমন্ত সোরেনের সরকারে মন্ত্রীও হন। পরবর্তীতে বিজেপি-তে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে বিজেপি-র টিকিটে কোডারমা থেকে নির্বাচনে জয়ী হন। এর পর শিক্ষামন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন অন্নপূর্ণা। বিজেপি-র সর্বভারতী সহ-সভাপতি পদেও রয়েছেন।


সাবিত্রী ঠাকুর


মধ্যপ্রদেশের ধার আসন থেকে প্রথম বার সাংসদ নির্বাচিত হন সাবিত্রী। এবারও ওই আসনেই তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। কংগ্রেসের রাধেশ্যাম মুভেলকে ২ লক্ষ ১৮ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন।


নিমুবেন বমভানিয়া


২০১৪ সালের পর এবারও বিজেপি নিমুবেনকে প্রার্থী করে। ভাবনগর কেন্দ্রে আম আদমি পার্টির উমেশভাই মাকওয়ানাকে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন তিনি। মনোবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে অনুপ্রিয়ার। 


অনুপ্রিয়া পটেল


আপনা দল (সোনেলাল)-এর প্রতিষ্ঠাতা সোনেলাল পটেলের মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর ২০০৯ সাল থেকে দলের রাশ সামলাচ্ছেন অনুপ্রিয়া। ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে নরেন্দ্র মোদির জন্য বারাণসীতে প্রচারও করেন। ২০১৪ সালে মির্জাপুর থেকে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন অনুপ্রিয়া। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০২১ সালে বাণিজ্য এবং শিল্পমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন।