অভিজিৎ চৌধুরী, চাঁচল: ইয়াসের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টির জেরে ভেসেছে মাছভরা পুকুর। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মালদার চাঁচল মহকুমার বহু মৎস্যচাষি। আর এই পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে চাঁচল মহকুমা প্রশাসন। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
ইয়াস চলে গেছে। রেখে গেছে দগদগে ক্ষত। করোনার দাপটে এমনিতেই অর্থনীতির শোচনীয় অবস্থা। তারওপর ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা দিয়েছে। তার যন্ত্রণা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মালদার চাঁচল মহকুমার বহু মৎস্যচাষি। চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের মতিহারপুর পঞ্চায়েতের নুরজামাল হোসেন লক্ষাধিক টাকার লোন নিয়ে ২ কুইন্টাল চারাপোনা ছেড়েছিলেন ৬ বিঘা পুকুরে।ইয়াসের প্রভাবে এমন বৃষ্টি হয়েছে যে, জমির আল ভেঙে জল ঢুকেছে পুকুরে। ভেসেছে অন্তত ৩ লক্ষ টাকার মাছ।
২৬ মে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সরাসরি বাংলা আঘাত না করলেও তার প্রভাব যে কতখানি ভয়াবহ তা বেশ বুঝতে পারছেন বঙ্গবাসী। দিকে দিকে হারানোর ছবি। চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের মৎস্যচাষি নুরজামাল হোসেন থেকে একই অবস্থায় পাশের গ্রাম ভীমপুরের সফিজান বিবির। লিজে মাছ চাষ করেন। এবারও ঋণ নিয়ে ৪ বিঘা পুকুরে চারাপোনা ছেড়েছিলেন। প্রবল বৃষ্টির জেরে মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাঁর।
মালদা জেলা মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, চাঁচল মহকুমার ৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৭০০ হেক্টর পুকুরে মাছ চাষ হয়। প্রবল বৃষ্টির জেরে সিংহভাগ পুকুর ভেসেছে। কতজন মৎস্যচাষি ক্ষতিগ্রস্ত, সঠিক তথ্য সংগ্রহ করছে স্থানীয় প্রশাসন।চাঁচলের মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল জানান, ৬টি ব্লকের মৎস্য আধিকারিকদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে। বিডিওরাও বিষয়টি দেখছেন।আপাতত ভেসে যাওয়া পুকুর আর পাশের জমিতে জাল ফেলে যতটা সম্ভব মাছ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন মৎস্যচাষিরা। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে।