নয়াদিল্লি: প্রায় এক বছর ধরে জেলে বন্দি রয়েছেন। সেখান থেকে ফের নির্বাচনের প্রস্তুতি। তবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ফিরতে নয়, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর পদে প্রার্থী হতে চান পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর হতে জেল থেকেই ব্রিটেনে আবেদনপত্র পাঠালেন তিনি। (Imran Khan)


অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বর্তমান চ্যান্সেলর ক্রিস প্যাটেন পদ ছাড়ার ঘোষণা করেছেন সম্প্রতিই। সেই খবর কানে যেতেই ইমরান অক্সফোর্ডের চ্যান্সেলর পদে আবেদন জানানোর তোড়জোড় শুরু করে দেন। সেই মতো আবেদনপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। ইমরানের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। (Oxford University Chancellor)


কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এক বছর ধরে জেলে বন্দি ইমরান। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সভা-মিছিল চালিয়ে গেলেও, পাকিস্তানের রাজনীতিতে ইমরানের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের নজর কাড়ার চেষ্টাই হয়ত করছেন ইমরান। 


কেউ কেউ আবার বলছেন, হতে পারে পাকিস্তানে সেনাকে বার্তা দিতে চাইছেন ইমরান। তাঁদের মতে, ক্রিকেট রাজনীতি ছেড়ে শিক্ষাক্ষেত্রকে তৃতীয় পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার পিছনে কৌশল রয়েছে ইমরানের। রাজনীতিতে আর ফিরতে চান না, এই বার্তাই তিনি দিতে চাইছেন পাক সেনাকে, যাতে নিশ্চিন্তে তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।


ইমরানের উপদেষ্টা সৈয়দ জুলফি বুখারি জানিয়েছেন, অক্টোবরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে চ্যান্সেলর নির্বাচন রয়েছে। সময় মতোই নিজের আবেদন পাঠিয়ে দিয়েছেন ইমরান। ক্রিসের জায়গায় অক্সফোর্ডের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তিনি। বুখারি জানান, অক্সফোর্ডের চ্যান্সেলরের পদ অত্যন্ত সম্মানজনক।  তিনি নিজে অক্সফোর্ড ফেরত। সেখানে ফিরে যেতে পারলে অত্যন্ত খুশি হবেন ইমরান। 


অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিরই ছাত্র ছিলেন ইমরান। সাতের দশকে অক্সফোর্ডের কেবল কলেজে রাজনীতি, দর্শন এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। অক্সফোর্ডের ক্রিকেট দলে থেকে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্রিটেনের অভিজাত মহলে নিয়মিত ওঠাবসা ছিল ইমরানের। এর পর জীবনে জুড়ে যায় ক্রিকেটের রঙিন অধ্যায় এবং সেখান থেকে রাজনীতি। দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা যদিও সুখকর হয়নি। 


তাহলে কি পুরনো জীবনেই ফিরতে চাইছেন ইমরান? পাকিস্তানের রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিতে চাইছেন নিজেকে? যদিও ইমরানের জন্য অক্সফোর্ডের চ্যান্সেলর হওয়া আহামরি কিছু নয় বলে মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। কারণ এর আগে, ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত, দীর্ঘ আট বছর ইউনিভার্সিটি অফ ব্র্যাডফোর্ডের চ্যান্সেলর ছিলেন তিনি। আগামী ২৮ অক্টোবর অক্সফোর্ডের চ্যান্সেলর নির্বাচন।


নির্বাচনে ইমরানকে টেক্কা দিতে পারেন ব্রিটেনের প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী টোনি ব্লেয়ার এবং বরিস জনসন। তবে ইমরান যদি জয়ী হন, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের জেল থেকে তাঁর মুক্তি একেবারে নিশ্চিত। কিন্তু অনুগামীদের ছেড়ে কি ইমরান চলে যাবেন? এই প্রশ্নও উঠে আসছে।