ইসলামাবাদ: গ্রেফতার পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan Arrest)। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (Islamabad High Court) বাইরে গ্রেফতার ইমরান। গ্রেফতার করল পাক রেঞ্জার্স (Pak Rangers)। আপাতত পাক রেঞ্জার্সের হেফাজতেই রয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
কী ঘটল?
গ্রেফতারির আগে এদিন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবীদের সঙ্গে রেঞ্জার্সের মারপিট বাধে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে ইমরান-সমর্থকদের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয় রেঞ্জার্সদের। গ্রেফতারির আগে পাকিস্তানের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী দলের 'কাপ্তান' বলেন, 'পাক সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগে অটল রয়েছি। এই জন্য গ্রেফতার বা মৃত্যুবরণ করতেও রাজি।' ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফওয়াদ চৌধরি পরে ট্যুইটারে অভিযোগ করেন, কোর্ট চত্বর থেকেই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণ করা হয়। ট্যুইটে স্পষ্ট অভিযোগ, 'অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোকজন তাঁকে অজানা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অভ্যন্তরীণ বিষয়ক সচিব এবং আইজি-কে ১৫ মিনিটের মধ্যে হাজিরা দিতে বলেছেন।' আর এক পিটিআই নেতা মুসররাত চিমার দাবি, 'ওরা ইমরান খানের উপর অত্যাচার করছে। খান সাহেবকে মারধর করছে। সম্ভবত ওঁর সঙ্গে কিছু করা হয়েছে।' সব মিলিয়ে তুমুল অশান্তি ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বরে।
প্রেক্ষাপট...
কয়েক মাস ধরেই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতারির জল্পনায় তপ্ত সে দেশের রাজনৈতিক পরিসর। একাধিক বার ইমরান খানের বাড়ির সামনে বিরাট পুলিশ বাহিনী জমায়েত হতে দেখা গিয়েছে। গত মার্চেই লাহৌরের জামান পার্কে ইমরানের বাড়ি ঘিরেছিল পুলিশ। সে সময় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন, ১৫ জন পিটিআই সমর্থককে আটকও করে পুলিশ। গ্রেফতার হতে পারেন আঁচ করে, ইমরান সেই সময় দেশবাসীকে একটি ভিডিও বার্তা দেন। বলেন, 'পুলিশ ভাবছে ইমরান খান জেলে চলে গেলে দেশের মানুষও ঘুমিয়ে পড়বেন। আপনাদের এই ভাবনাকেই ভুল প্রমাণিত করতে হবে। আপনাদের প্রমাণ করতে হবে যে এই দেশ হার মানবে না।' প্রসঙ্গত প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক, রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মার্চে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ২০২২ সালের অগাস্টে এক মহিলা বিচারক ও দুই পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে । এই মামলায় বিচারক ইমরানকে গ্রেফতারের সময়সীমা দিয়েছিলেন ২১ মার্চ। গত বছর আদালতে হাজির হয়ে বিচারপতির কাছে এই বিষয়ে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি। তবুও মিলল না রেহাই। এছাড়াও আগে থেকেই তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারির খাঁড়া ঝুলছে ইমরানের মাথার উপর। এই মামলায় তলব সত্ত্বেও বারবার হাজিরা এড়িয়েছেন ইমরান । তাই আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে পৃথক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সেখানে বলা ছিল ইমরানকে গ্রেফতার করতে হবে ১৮ মার্চের মধ্যে। ইতিমধ্য়ে ইমরানের বিরুদ্ধে মোট ৮১ টি মামলা রয়েছে সারা দেশে। সব মিলিয়ে তাঁর গ্রেফতারি যে সময়ের অপেক্ষা, সেটি জানাই ছিল। কিন্তু যে ভাবে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে পাক রেঞ্জার্স তাঁকে গ্রেফতার করল, তার পর পাকিস্তানের রাজনীতি কোন খাতে বইবে সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে সব মহলেই।
আরও পড়ুন:পার্ক না কি ট্রেডমিল? দৌড়নোর লাভ কোথায় বেশি? কোনটা বাছবেন?