নয়াদিল্লি: দেশের সংসদে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন বিরোধী শিবিরের বেশ কয়েক জন। আর সেই আবহেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নিযুক্তি সম্পন্ন হল। সেই নিয়ে ফের বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এই নিযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। (NHRC Chairperson)
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ভি রামসুব্রহ্মণ্যম সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন নিযুক্ত হয়েছেন। নোটবন্দি নিয়ে মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের সদস্য ছিলেন তিনি। সোমবার তাঁর নিযুক্তির ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আর সেই নিয়ে তীব্র আপত্তি জানাল কংগ্রেস। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গে জানিয়েছেন, সর্বসম্মতিতে এই নিযুক্তি হয়নি। (National Human Rights Commission)
রাহুল এবং খড়গে জানিয়েছেন, বুধবার সিলেকশন কমিটির বৈঠক হয়। কিন্তু আগে থেকেই সব ঠিক করে রাখা ছিল। সকলের মতামত নিয়েই এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কারও মতামতের ধার ধারেনি কেন্দ্র। সংখ্যার জোরে নিজেদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েছে কেন্দ্র। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, সিলেকশন কমিটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে।
রাহুল এবং খড়গের মতে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। নাগরিকদের, বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত তাদের উপর। সেখানে সব পক্ষের প্রতিনিধি থাকাই কাম্য। কিন্তু এক্ষেত্রে তা হয়নি। কংগ্রেসের তরফে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রোহিন্তন ফলি নারিমান এবং কেএম জোসেফের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। যোগ্যতা এবং সবপক্ষেপ প্রতিনিধিত্বের কথা মাথায় রেখেই নাম সুপারিশ করা হয় বলে জানিয়েছে তারা।
কংগ্রেসের যুক্তি, বিচারপতি নারিমান বিচার বিভাগের এক উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি সংখ্যালঘু পার্সি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিও। একই ভাবে বিচারপতি জোসেফও সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। ব্যক্তি স্বাধীনতা, প্রান্তিক মানুষের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন হিসেবে যোগ্যতার নিরিখে তাঁরাই সবচেয়ে এগিয়ে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে ওড়িশা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এস মুরলিধর, রাজস্থান এবং ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল হামিদ কুরেশির নামও সুপারিশ করে কংগ্রেস। সেই সুপারিশও মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে কেন্দ্র প্রিয়ঙ্ক কানুনগো, বিচারপতি বিদ্যুৎরঞ্জন সারঙ্গিকে নিয়োগ করা হয়েছে। কানুনগো শিশুর অধিকার রক্ষা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বিদ্যুৎরঞ্জন।