নয়াদিল্লি: সংঘাত পুরোদস্তুর যুদ্ধের আকার নিচ্ছে কার্যত। কারণ ইরান বহনাম ইজরায়েল সংঘাতে নিজেকে যুক্ত করেছে আমেরিকাও। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে তারাও। আর এই গোটা পরিস্থিতির জন্য ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেই কাঠগড়ায় তুলছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন। চিরকাল ক্ষমতা ধরে থাকতে নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন এবং তাতে আমেরিকাকেও টেনে নিয়ে গিয়েছেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরাও। আর সেই আবহেই ক্লিন্টনের মন্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ। (Iran-Israel Conflict)

ইরানে হামলা চালানোর নেপথ্যে সম্ভাব্য বিপদের যুক্তি খাড়া করেছে ইজরায়েল। তাদের দাবি, ইরান যে গতিতে পরমাণু শক্তি বৃদ্ধি করছে, তাতে যে কোনও দিন বিপদ নেমে আসতে পারে। তাই ইরান আঘাত হানার আগেই তাদের পরমাণু শক্তি গুঁড়িয়ে দেওয়াকে যুক্তিযুক্ত বলে দাবি করেছেন নেতানিয়াহু। গোড়ার দিকে এই সংঘাত থেকে দূরত্ব বজায় রাখলেও, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইজরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে ইরানে। (Bill Clinton)

কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এই আগ্রাসনে বিপদ দেখছেন দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন। তাঁর বক্তব্য, “প্রথমেই বলে রাখি, পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি স্থাপন নিয়ে কোনও কথাই হচ্ছে না, কারণ ইজরায়েল তা চায়-ই না। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আমলে প্যালেস্তিনীয়দের নিজের রাষ্ট্র দেওয়ার কোনও অভিসন্ধিও নেই।” হঠাৎ ইরানে হামলা চালাতে গেলেন কেন নেতানিয়াহু, তাও ব্যাখ্য়া করেছেন ক্লিন্টন। তাঁর কথায়, “নেতানিয়াহু বরাবর ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাইছিলেন। কারণ তবেই চিরকাল ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন তিনি। গত ২০ বছর ধরে উনিই তো ক্ষমতায়। কিন্তু আমার মনে হয়, আমাদের বিষয়টির নিষ্পত্তি করা উচিত। আশাকরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই পথেই হাঁটবেন।”

পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পক্ষেই সওয়াল করেছেন ক্লিন্টন। তিনি বলেন, “পশ্চিম এশিয়ায় বন্ধু দেশগুলিকে আশ্বস্ত করতে হবে আমাদের, যে আমরা ওদের পাশে থাকব, বিপদে ওদের রক্ষা করব। অঘোষিত যুদ্ধের রাস্তা যদি বেছে নিই, যে যুদ্ধে নিরীহ নাগরিকরাই বলি হচ্ছেন, রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগই নেই যাঁদের, তা মোটেই সমাধান নয়।”

ক্লিন্টন জানিয়েছেন, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র উঠুক, তা তিনিও চান না। কিন্তু তাই বলে নিরীহ নাগরিক, যাঁরা আত্মরক্ষায় সক্ষম নন, তাঁদের হত্যা করা কাজের কথা নয়। কিন্তু ক্লিন্টন পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বললেও, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তাতেই হাঁটছেন এই মুহূর্তে, যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কূটনীতিকদেরও।