ঢাকা: নোভেল করোনাভাইরাস থেকে যখন মুক্তির পথ খুঁজছে গোটা বিশ্ব, তখন বাংলাদেশের একদল চিকিত্সকের দাবি, দুটি ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহৃত ওষুধেই মারণ রোগ সারবে। তাঁদের দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণগুলি প্রবল, এমন রোগীদের ওপর সেই ওষুধ প্রয়োগ করে চমকে দেওয়া সুফল মিলেছে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর ডঃ মহম্মদ তারেক আলম। যে ৬০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীকে দুটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই পুরোপুরি সেরে উঠেছেন, দাবি তাঁর।
ডঃ আলম বেসরকারি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হসপিটালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান, দেশের নামী ডাক্তার। বাংলাদেশ চিকিত্সকদের দলটিতে দেশের সেরা ডাক্তাররাই আছেন।
দুনিয়াভর কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, এ ব্যাপারে গবেষণা অনেক দূর এগিয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তার মধ্যেই পড়শী দেশের ডাক্তারদের দলটি জানিয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীদের তাঁরা দিয়েছেন প্রায়শই ব্যবহৃত অ্যান্টিপ্রোটোজল মেডিসিন ইভারমেকটিনের একটি ডোজ, তার সঙ্গে ডক্সিসাইক্লিন নামে অ্যান্টিবায়েটিক। আর এই দুটি ওষুধের জোড়া ফলায় চিকিত্সাধীন রোগীদের মধ্যে কার্যত অবিশ্বাস্য সুফল দেখা গিয়েছে।
ডঃ আলম বলেছেন, আমার টিম শুধুমাত্র করোনাভাইরাস আক্রান্তদের এই দুটি ওষুধ খেতে বলেছে। এই রোগীদের বেশিরভাগই গোড়ায় শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা, আনুষঙ্গিক উপসর্গ নিয়ে এসেছিলেন। পরে টেস্টে করোনাভাইরাস পজিটিভ হন।
এই দুটি ওষুধে সাড়া দিয়ে মাত্র চারদিনে করোনাভাইরাস রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন,ওষুধের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বলেও দাবি করেছেন ডঃ আলম। তিনি বলেছেন, প্রথমে আমরা সম্ভাব্য সংক্রমিতদের পরীক্ষা করাতে বলছি। পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হলে ওষুধদুটো দিচ্ছি। চারদিনে সেরে উঠছেন। পদ্ধতি মেনে দ্বিতীয়বার বা তারপরও আরও কয়েকবার পরীক্ষা করেও নিশ্চিত ফল আসছে যে, ওঁরা নেগেটিভ। আমরা এই জোড়া ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। এখন তাঁরা কোভিড-১৯ এর চিকিতসায় এর স্বীকৃতি জোগাড় করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, আন্তর্জাতিক স্তরেও যাতে স্বীকৃতি মেলে, সেজন্যও জোর প্রয়াস চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রিভিউ ও স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজন বলে এই ওষুধদুটো সম্পর্কে একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে বের করার জন্য ডঃ আলমের টিম একটি রিসার্চ পেপার তৈরি করছে। তাঁর সহকারী ডঃ রবিউল মোরশেদ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান বিএমসিএইচ কোভিড-১৯ এর চিকিত্সার জন্য নয়, কিন্তু সরাসরি বা পরোক্ষ ভাবে প্রচুর মানুষ এখানেই ভিড় করেন। কিন্তু তাঁদের সবাই চিকিত্সায় চারদিনে ভাল সাড়া দিয়ে কোভিড-১৯ নেগেটিভ হয়েছেন, তিনদিনে ৫০ শতাংশ উপসর্গ কমার লক্ষণ দেখা গিয়েছে।
সারা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের দাপট দেখা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সেদেশে ২০৯৯৫টি করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে, মারা গিয়েছেন ৩১৪ জন।