প্যারিস: প্যারিসে আয়োজিত অলিম্পিক্সের দিকে নজর গোটা বিশ্বের। আর সেই আবহেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরঁ। অলিম্পিকের আসরে ক্রীড়ামন্ত্রী আমেলি উডেয়া-কাস্তেরার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অলিম্পিক্সের আসরে মাকরঁকে জড়িয়ে ধরেন আমেলি। ঠোঁট ছোঁয়ান কানের নীচে। সেই নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। (Emmanuel Macron)


একে ফ্রান্স, তার উপর প্যারিস, প্রেমের শহর। হাত ধরা, ঠোঁটে ঠোঁট রাখা, তেমন কোনও আহামরি বিষয় নয় সেখানে। কিন্তু যেভাবে মাকরেঁর কানের নীচে ঠোঁট ছুঁইয়েছেন আমেলি, সেই নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে। সৌজন্য দেখাতে গালে বা হাতে ঠোঁট ছোঁয়ানোর রীতি থাকলেও, কানের নীচে ঠোঁট ছোঁয়ানোকে শারীরিক ঘনিষ্ঠতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। স্বভাবতই প্রকাশ্যে মাকরঁ এবং আমেলি-র ওই আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সেদেশের নাগরিকরাও। (Paris Olympics 2024)


শুধু তাই নয়, মাকরঁ এবং আমেলি-র ভাবভঙ্গি নিয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। ছবিতে দেখা গিয়েছে, আমেলির কাঁধে হাত রেখেছেন মাকরঁ। হালকা ভাবে ঠোঁট ছোয়াচ্ছেন আমেলি-র গালে। মাকরেঁর এই আচরণে কোনো অস্বাভাবিকতা না দেখলেও, আমেলির ভাবভঙ্গিতেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন সকলে। ছবিতে দেখা গিয়েছে, বাঁ হাতে মাকরঁকে ধরে রয়েছেন আমেলি। ডান হাত মাকরেঁর ঘাড়ে। একপ্রকার মাকরঁকে নিজের দিকে টেনে রেখেছেন তিনি। মাকরেঁর কানের নীচে ঠোঁট ছোঁয়ানোর সময় তাঁর চোখও ছিল বন্ধ। 



এতেই অন্য গন্ধ পাচ্ছেন সন্ধিৎসুরা।  নেটিজেনদের দাবি, সম্পর্ক প্রগাঢ়  না হলে অন্য পুরুষের এত ঘনিষ্ঠ হওয়া যায় না। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো সালিশি বসে গিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী গেব্রিয়েল আতাল রয়েছেন ছবিতে। তবে অন্য দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তিনি। নেটিজেনদের দাবি, অস্বস্তিতেই চোখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন তিনি। অলিম্পিক্সের আসরে প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয় বলে মত নেটিজেনদের। ফ্রান্সের পত্রপত্রিকাতেও এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।


এমনিতে আমেলি-কে ঘিরে বিতর্ক কম নয়। আমেলি বিবাহিতা। সম্প্রতি স্যেন নদীতে ঝাঁপও দেন তিনি। ব্যাখ্যা দেন, খেলোয়াড়রা ব্যকটিরিয়া নিয়ে ভয় পাচ্ছিলেন, তাই সকলকে আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জলের গুণমান বিচার করে বেশ কিছু পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিলই করতে হয় পরে। জানুয়ারি মাসে আমেলি-কে শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও দেন মাকরঁ। কিন্তু একমাসও ওই পদ ধরে রাখতে পারেননি। সরকার চালিত স্কুলগুলি গুণমান নিয়ে প্রশ্ন করায় সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। 


অন্য দিকে, রাজনীতি পেশা হলে, মাকরেঁর ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই চর্চায়। স্ত্রী ব্রিজিতের সঙ্গে যদিও বরাবরই সুখের সংসার তাঁর। যত চর্চা, সবই তাঁদের অসমবয়সি প্রেম এবং বিয়ে ঘিরে। মাকরেঁর চেয়ে বয়সে ২৪ বছরের বড় ব্রিজিত। স্কুলে ব্রিজিত ছিলেন মাকরেঁর শিক্ষিকা। স্বামী-সংসার ছেড়ে মাকরেঁর হাত ধরেন তিনি। ২০০৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। এখনও অটুটই রয়েছে তাঁদের দাম্পত্য। এমনকি ব্যক্তিগত জীবনে আর কোনও বিতর্ক ছুঁতে পারেনি মাকরঁকে। কিন্তু অলিম্পিক্সের আসরে আমেলি-র সঙ্গে আমেলি-র ছবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ব্রিজিতের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য় নিয়েও শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া।