কাঠমান্ডু: অশান্তির পর স্থিতাবস্থা ফিরেছিল। কিন্তু নতুন করে ফের অশান্ত নেপাল। আবারও রাস্তায় নামলেন Gen Z-রা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে সবরকমের জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছে সেখানে। কার্ফু জারি হয়েছে ১২টি জেলায়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পূর্বতন সরকার ঘনিষ্ঠদের সংঘর্ষের খবরও সামনে আসছে। (Nepal Gen Z Protests)
গত সেপ্টেম্বর মাসেই Gen Z আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নেপাল। সেই আন্দোলনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে দেশের রাজনীতিতে। ক্ষমতাসীন সরকারকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। নতুন সরকার গঠিত হয় সকলের সমর্থনে। কিন্তু মাঝে একটি মাসের ব্যবধান। আবারও Gen Z আন্দোলনে তেতে উঠল ভারতের পড়শি দেশ। (Nepal News)
এখনও পর্যন্ত যা খবর, সেই অনুযায়ী, বরা জেলায় সবরকমের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি-র কমিউনিস্ট পার্টি, Unified Marxist Leninist (CPN-UML) অনুগামী ও সমর্থকদের সঙ্গে Gen Z-দের সংঘর্ষ বেঁধেছে জায়গায় জায়গায়। রাত ৮টা পর্যন্ত কার্ফুও জারি হয়েছে সেখানে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে নিরাপত্তাবাহিনীকে লাঠিচার্জ করতে দেখা গিয়েছে। আগুন, ধোঁয়াও চোখে পড়ে। টায়ার জ্বালিয়ে ছুড়তে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
তবে হঠাৎ করে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হল না। বুধবারই উত্তেজনার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। গতকাল বরা জেলার সিমারায় মিছিল বের করে Gen Z-দের একটি গোষ্ঠী। ওই এলাকাতেই মিছিল বের করে ওলির CPN-UML-এর কর্মীরা। মুহূর্তের মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। বিমানবন্দরের কাছের এলাকাও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুভব করে তড়িঘড়ি কার্ফু জারি করে সরকার। তবে বৃহস্পতিবারও সেই উত্তেজনা বজায় রয়েছে। যদিও নেপাল পুলিশের মুখপাত্র আবি নারায়ণ কাফলে AFP-কে বলেন, "পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কেউ গুরুতর আহত হয়নি।"
নেপালের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশালী কার্কী শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন। দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিও সুশালী। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ সামলাচ্ছেন তিনি। দুই পক্ষকেই রাজনৈতিক উস্কানিতে পা না দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন সুশালী। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন নেপালে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সেই নির্বাচন যাতে সম্পন্ন হয়, তার জন্য সকলকে সংযত হতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার সুশীলা বিবৃতি জারি করে বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং নিরাপত্তাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছ প্রস্তুত থাকতে। শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য় ভয়মুক্ত ও নিরপেক্ষ পরিস্থিতি কাম্য।" বুধবার বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। সেখানে বলেন, "নতুন প্রজন্মের হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দিতে চাই, তার জন্য দূরদর্শী মানুষকে প্রয়োজন।"
সেপ্টেম্বরে নেপালে যে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে নামেন Gen Z-রা তাতে ৭৬ জন প্রাণ হারান কমপক্ষে। নেতা-মন্ত্রী, তাঁদের পরিবারের লোকজনও রক্ষা পাননি। দেদার ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড চলে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দেশের সংসদ ভবনে, আদালতে, সরকারি দফতরেও।