মিনেপ্পোলিস(আমেরিকা) : জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় মিন্নেপোলিসের প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের সাড়ে ২২ বছর কারাবাসের নির্দেশ। মিনেপ্পোলিসের আদালতকক্ষে ক্ষমা না চেয়েই ফ্লয়েড পরিবারকে "সমাবেদনা" জানান ৪৫ বছরের শভিন। এর পরই প্রাক্তন এই পুলিশ অফিসারকে সাজা শোনার বিচারক পিটার কাহিল। তবে তাঁকে দাবিমতো ৩০ বছর সাজা দেওয়া হয়নি।


সাজা শোনানোর সময় ডেরেক শভিনকে পিটার কাহিল বলেন, আপনি যে পজিশনে ছিলেন সেই পজিশনের আস্থা-বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। তাছাড়া জর্জ ফ্লয়েডের ওপর নিষ্টুরতা দেখিয়েছেন। তাই এই শাস্তি। 


টানটান শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়। শুনানি চলাকালীন ফ্লয়েডের ৭ বছরের মেয়ের রেকর্ড করা মেসেজ শোনানো হয় আদালতকক্ষে। রায় ঘোষণার পর ফ্লয়েড পরিবার বলেছে, আমেরিকায় বর্ণে-র মধ্যে সম্বন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে এই রায় একটি "ঐতিহাসিক" পদক্ষেপ। 


২০২০ সালে মে মাসে শভিন এবং তাঁর তিন সহকর্মী ৪৬ বছরের ফ্লয়েডকে গ্রেফতার করে। ফ্লয়েডের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি একটি ২০ ডলারের জালনোট চালানোর চেষ্টা করছিলেন মিনেপ্পোলিসে। পুলিশ এসে তাঁক হাতকড়া পরান। তার পর তাঁকে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেন শভিন। ফ্লয়েডের তীব্র আর্তনাদ স্বত্ত্বেও প্রায় ১০ মিনিট তাঁকে এভাবে ধরে রাখা হয়। এরপর শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।


পুরো ঘটনাটির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন এক তরণী। সেটি ভাইরাল হয়। করোনা অতিমারির জন্য বেশ কিছুদিন আটকে পড়লেও, কয়েকদিন পর সাধারণ মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন। বর্ণবিদ্বেষ এবং পুলিশের নিষ্ঠুরতা প্রতিবাদে সরব হন।  


আমেরিকার বিভিন্ন শহরে শুরু হয় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের একাধিক ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি হাতে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে অনেকে নীরব প্রতিবাদও জানান। এর জেরে অস্বস্তিতে পড়ে তৎকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, জর্জের মৃত্যু মর্মান্তিক। এমনটা হওয়া উচিত ছিল না। এই ঘটনায় দেশবাসীর মনে আতঙ্ক, ক্ষোভ ও শোকের আবহ ভরে দিয়েছে। ট্রাম্প যোগ করেন, তাঁর সমবেদনা নিহতের পরিবার ও তাঁর সমর্থনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেওয়া মার্কিনীদের সমর্থনে রয়েছে। এর পরই কারাবাস শুরু হয় শভিনের।